দলীয় সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে নদীর জায়গা দখলের অভিযোগ

  10-06-2018 09:06PM

পিএনএস, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : খুলনার পাইকগাছায় এক মহিলালীগের নেত্রীর বিরুদ্ধে এমপির নাম ভাঙ্গিয়ে নদীর জায়গা দখলের অভিযোগ উঠেছে। অবৈধ দখল নিতে গিয়ে প্রথমে জনগণের বাঁধার মুখে পড়েন। সর্বশেষ তিনি তার দখল বজায় রাখতে নয়া কৌশল অবলম্বন করে সেখানে দলীয় সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছেন। মহিলা লীগের নেত্রীর এমন ঘটনায় খোদ দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি মহিলা নেত্রী নাছিমা বেগম উপজেলার বেতবুনিয়া গ্রামের মধ্যবর্তী কুচিয়া নদীর জায়গা অবৈধ ভাবে দখল নিতে সেখানে কার্যক্রম শুরু করেন। এতে ক্ষুব্ধ হন এলাকার মানুষ। এক পর্যায় বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দৃষ্টিগোচর করেন স্থানীয় লোকজন। পরে নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ভূমি কর্মকর্তা সরেজমিন গিয়ে উক্ত দখল প্রক্রিয়া বন্ধ করেদেন। কিন্তু থেমে নেই নাছিমা বেগমের অপকৌশল। নয়া কৌশলে দখল প্রক্রিয়া সফল করতে অবশেষে শুক্রবার দলীয় কার্যালয়ের নামে এক সাইনবোর্ড লাগিয়ে দখল নিয়েছেন। এ ঘটনায় স্থানীয় নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীর মাঝে এক বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

মহিলা নেত্রী নাছিমা বেগম এমপি'র অনুমতি নিয়েই সাইনবোর্ড লাগিয়ে জায়গাটি নিজের অনুকূলে নেওয়ার পায়তারা করছেন বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। নদীর জায়গা দলীয় প্রভাব খাঁটিয়ে দখল নেওয়াকে সাধারণ মানুষসহ খোদ নিজ দলীয় নেতাকর্মীরাও ভাল চোখে দেখছেন না। দখল প্রক্রিয়া পাকাপক্ত করতে দলীয় সাইনবোর্ড টাঙ্গানো অপকৌশল ছাড়া আর কিছুই না বলে মনে করছেন দলীয় নেতাকর্মীরাসহ সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এস এম এনামুল হক জানান, কুচিয়া নদীর জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ করার বিষয়ে ইউএনও মহাদয়ের নির্দেশে নায়েবের সাথে আমি গিয়েছিলাম মাত্র। সোলাদানা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা (তহশীলদার) মো. মনিরুজ্জামান শিকদার জানান ইউএনও মহাদয়ের নির্দেশে ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয় এবং কাগজপত্র দেখানোর জন্য ৩ দিনের সময় দেয়া হয়েছিল। কিন্তু নাছিমা বেগম এখনো তার স্বপক্ষের কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।

সোলাদানা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মহাসিনুর রহমান সরদার পিএনএসকে জানান, আমি প্রায় ৩০ বছর ধরে আ'লীগের সভাপতি কিন্তু আ'লীগের অফিস করার জন্য একটা জায়গা নিতে পারিনি। এমন ধরনের নেতা-নেত্রীদের কারনে দলের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে মনে করি। একই কথা বলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক নির্মল চন্দ্র ঢালী। কুচিয়া নদীর জায়গা দখলকারী অত্র ইউনিয়ন মহিলা আ'লীগের সভানেত্রী নাছিমা বেগম জানান, আমি এমপি মহাদয়ের মৌখিক নির্দেশে জায়গা দখল করেছি। তার কাছে লিখিত কোনো অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এমপি মহাদয়ের মৌখিক অনুমতির রেকর্ড আমার কাছে আছে। শুনতে চাইলে শোনাতে পারবো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফকরুল হাসান জানান যদি আবার সরকারী জায়গায় নির্মাণ কাজ করা হলে তা উচ্ছেদ করা হবে। কোনো ভাবে অবৈধ দখল করতে দেয়া হবেনা। স্থানীয় এমপি শেখ মো. নুরুল হকের মুঠোফোনে ফোন দিলে রিসিভ না করায় তার মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন