পাউবো’র ভুলে শরীয়তপুরে ভোট কমছে নৌকার

  30-11-2018 06:26PM

পিএনএস (মোঃ শাহাবুদ্দিন শিকদার) : পাউবো’র ভুলে শরীয়তপুরে ভোট কমছে নৌকার। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শরীয়তপুরের নড়িয়া ও জাজিরার নদী ভাঙ্গন কবলিত মানুষের দুঃখ গোচাতে ১০৯৭ কোটি টাকার নদী তীর প্রতিরক্ষা কাজের প্রকল্প অনুমোদন করে দিলেও শুধুমাত্র পাউবো’র ভুলে ঝুকির মুখে পড়ছে শরীয়তপুরের লাখ লাখ মানুষ। ৮.৯ কিলোমিটারের বিশাল ভাঙ্গন থামাতে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এমন এক প্রতিষ্ঠানকে যারা ফরিদপুর পাউবো’র ১৭৫ কোটি টাকা চুক্তিমূল্যের কাজ নিয়ে পাউবো এবং ভাঙ্গন কবলিত মানুষকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। ২০১৯ সালের জুন মাস পর্যন্ত কাজটির ডিপিপি মেয়াদ থাকলেও এই পর্যন্ত কার্যাদেশ পাওয়া সাব-কন্ট্রাক্টর মাত্র ৯% কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে এবং বিপরীতে বিল তুলে নিয়েছে ১৩ কোটি টাকা। এই গতিতে কাজ চললে ঐ প্রকল্পটি আগামী ৫ বছরেও সম্পন্ন হবে কি না তা নিয়ে খোদ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল অনেকের সন্দেহ রয়েছে। এতো সন্দেহ থাকার পরেও একই অদক্ষ ও অনভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে কেন এবং কার প্রভাবে শরীয়তপুরের নড়িয়া ও জাজিরায় ১০৯৭ কোটি টাকার সংবেদনশীল প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা নিয়ে নানা গুঞ্জন ও জিজ্ঞাসা রয়েছে।

আজ ৩০ শে নভেম্বর’২০১৮। সম্প্রতি শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসকের দরবারে আয়োজিত সভায় আজ থেকে শরীয়তপুরে কাজ শুরুর কথা ছিল। সূর্যাস্ত পর্যন্ত ভাঙ্গন কবলিত মানুষ নদী তীরে অপেক্ষা করে ঠিকাদার বা সাব-কন্ট্রাক্টর কারো চেহারা পর্যন্ত দেখেনি। কেউ একজন তাদের জানিয়েছেন, ডিসেম্বর মাসের ৩ তারিখ থেকে কাজ শুরু হবে। একথা শুনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছে ভাঙ্গন কবলিত মানুষ। প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে- কিভাবে শুরু হবে কাজ? এখনো এক কণা বালু যোগাড় করা হয়নি- জিও ব্যাগ আনা হয়নি- এস্কাভেটর আসেনি- আসেনি বার্জ- কন্ট্রাক্টরদের শেড বানানো হয়নি- এমনকি কেউ এসে মাপজোক পর্যন্ত করেনি- তাহলে সহসাই কাজ শুরু করা হবে কিভাবে? এই প্রশ্নগুলোর কোনো উত্তর নেই পাউবো প্রশাসনের।

সূত্রে মতে, শরীয়তপুরের নড়িয়ার ভাঙ্গন প্রতিরোধে নভেম্বর মাসেই কাজ শুরু করা উচিৎ ছিল। কারণ, এপ্রিল মাস পর্যন্ত পদ্মার এই পয়েন্টে কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব। মে মাসে পদ্মা আবার উত্তাল হবে। সর্বগ্রাসী পদ্মা আবার বিলীন করে নিবে মানুষের দালান-কোঠা, হাট-বাজার, ভিটেমাটি, ফসলী জমি- সবকিছু। তখন এই প্রকল্প বাস্তবায়নে আবার ডিপিপি সংশোধন করতে হবে। বৃদ্ধি পাবে মূল্য। ঠিকাদারের কপাল খুলবে। অন্যদিকে, কপাল পুড়বে নদী তীরের মানুষের। প্রশ্নবিদ্ধ হবে সরকার। ভোট কমবে নৌকার।

অভিজ্ঞমহল মনে করেন, শরীয়তপুরের আলোচ্য প্রকল্প বাস্তবায়নে অপারগ হলে কপাল পুড়তে পারে পাউবো’র সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এবং প্রধান প্রকৌশলীসহ অনেকের। প্রশ্নের মুখে পড়বে পাউবো প্রশাসন। ইমেজ ক্ষুন্ন হবে পাউবো’র দক্ষ, সৎ ও কর্মঠ মহাপরিচালক মাহফুজুর রহমানের।

সূত্র মতে, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী এবং সম্মানিত সচিব এই প্রকল্প বাস্তবায়নে অত্যন্ত আন্তরিক। আলোচ্য প্রতিবেদনে যে প্রাসাঙ্গিক ভাবনা উত্থাপিত হয়েছে তার চিন্তা-চেতনার সাথে তারা অনেকটাই সহমত। তাহলে কোন্ শক্তির খুটির জোরে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত প্রকল্প?

অভিজ্ঞমহল আরো মনে করেন, শরীয়তপুরের নড়িয়ার প্রকল্প বাস্তবায়নে পাউবো এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আরো কঠোর হওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন