পিএনএস ডেস্ক: সব শ্রেণীর গ্যাসের দাম বৃদ্ধির জন্য বিতরণ ও সঞ্চালন ট্যারিফ নিয়ে গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানির (জিটিসিএল) প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি শুরু হচ্ছে ১১ মার্চ। শুনানি শেষে আগামী মাসের শুরু থেকেই শিল্প, বাণিজ্য ও আবাসিকসহ সব খাতের গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হতে পারে। গতকালও এক অনুষ্ঠানে গ্যাসের দাম সমন্বয়ের বিষয়টি জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তবে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলেও বিদ্যুতের ওপর এর খুব বেশি প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স (এফইআরবি) আয়োজিত মিট দ্য এনার্জি রিপোর্টার্স শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সব ধরনের গ্যাসের মূল্যহার সমন্বয়ের জন্য বাংলাদেশ এনার্জি রেগুরেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে প্রস্তাব করেছি। এক্ষেত্রে বিদ্যুতের দামে বড় কোনো পরিবর্তন হবে না। দ্বৈত জ্বালানির যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে, সেগুলো গ্যাসে পরিচালিত হলে, সেক্ষেত্রেও দাম বৃদ্ধির দরকার হবে না। এ সুযোগটি আমাদের আছে। তবে বিষয়টি সম্পূর্ণ কমিশনের ওপর নির্ভর করছে। সরকার মূল্যবৃদ্ধির পরও ভর্তুকি দিচ্ছে। কারণ আমরা সাশ্রয়ী মূল্য বিদ্যুৎ দিতে চাই।
এক প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, ২০২৩ সালের দিকে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো উৎপাদনে আসবে। ব্যয়বহুল জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে। তখন বিদ্যুতের দাম সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে। সে সময় জ্বালানি তেলভিত্তিক কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন নেমে আসবে ১০-১২ শতাংশে।
দেশী জ্বালানির ওপর গুরুত্ব দিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, যেসব বড় বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র আসছে, সেগুলো আমদানি করা কয়লা ও গ্যাসে চালাতে হবে, যা খুবই ব্যয়বহুল। সাশ্রয়ী দামে বিদ্যুৎ দিতে হলে নিজেদের কয়লার দিকে নজর দিতে হবে। তবে এক্ষেত্রে পরিবেশ ও স্থানীয় অধিবাসীদের বিষয়েও সচেতন থাকতে হবে।
আমদানিনির্ভর গ্যাস অর্থনীতিকে ঝুঁকিতে ফেলবে কিনা জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৮ ডলার দিয়ে প্রতি হাজার ঘনফুট এলএনজি কেনা হলেও ইউনিটপ্রতি বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় দাঁড়ায় ৭ সেন্টের মতো, যা ভারত থেকে কেনা বিদ্যুতের তুলনায় সাশ্রয়ী। শিল্প-কারখানার প্রবৃদ্ধি ও এলএনজির ব্যয়ের তুলনামূলক বিশ্লেষণে অর্থনৈতিক ঝুঁকির সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তিনি।
গ্যাসের অবৈধ সংযোগ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৩০ কোটি ঘনফুট এলএনজি ব্যবহার করছে চট্টগ্রাম। ঢাকায় আসছে ১৫ কোটি ঘনফুট। কিন্তু এর কোনো হদিস মিলছে না। পুরনো পাইপলাইনের কারণে হয় সিস্টেম লস হচ্ছে, না হয় চুরি হচ্ছে। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এফইআরবি চেয়ারম্যান অরুণ কর্মকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক সদরুল হাসান। প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারি মাসে সব ধরনের গ্যাসের দাম গড়ে ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে বিইআরসির কাছে প্রস্তাব দিয়েছে ছয়টি বিতরণ কোম্পানি ও একমাত্র গ্যাস সঞ্চালন প্রতিষ্ঠান জিটিসিএল। এক্ষেত্রে সার ও বিদ্যুৎ খাতে ব্যবহূত গ্যাসের দাম সবচেয়ে বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতে ব্যবহূত গ্যাসের দাম আগের চেয়ে ১৪২ শতাংশ বাড়িয়ে ঘনমিটারপ্রতি ৩ টাকা ১৬ পয়সা থেকে ৭ টাকা ৬৬ পয়সা করার প্রস্তাব দিয়েছে গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো।
পিএনএস/আনোয়ার
সব খাতে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ইঙ্গিত
03-03-2019 09:21AM