‘আমরা মুসলিম বিশ্বের জেরুজালেম হারানোর অনুমতি দেব না’

  15-05-2018 10:21AM


পিএনএস ডেস্ক: গাজা সীমান্তে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর বর্বর হত্যাযজ্ঞের কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান বলেছেন, আমরা আজকের দিনটিতে (সোমবার) মুসলিম বিশ্বের জেরুজালেম হারানোর অনুমতি দেব না।

সোমবার লন্ডনে তুর্কি ছাত্রদের এক অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষনে এরদোগান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘ইসরাইল একটি প্রতিহিংসাপরায়ণ সন্ত্রাসী রাষ্ট্র। ইসরাইল আজ যা করেছে তা একটি গণহত্যা। আমি এই মানবিক নাটক, গণহত্যা- ইসরাইল বা আমেরিকার যে পক্ষ থেকেই আসুক না কেন এর নিন্দা করি।’

এরদোগান বলেন, ‘আমরা আজকের দিনটিতে মুসলিম বিশ্বের জেরুজালেম হারানোর অনুমতি দেব না।’

গাজার গণহত্যাকে মানবিক ট্র্যাজেডি উল্লেখ করে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতির কথা পুর্নব্যক্ত করেন।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট ফিলিস্তিনিদের একজন ডিফেন্ডার হিসেবে নিজের অবস্থান নিয়েছেন। এর আগে, ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে জেরুজালেমকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি এবং তার দূতাবাস শহরটিতে সরিয়ে নেয়ার কঠোর সমালোচনা করেছেন তিনি। তিনি মার্কিন এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন।

এদিকে, গাজা সীমান্তে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর বর্বর হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত তুর্কি রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে আঙ্কারা। এছাড়াও, ৫৮ ফিলিস্তিনি হত্যার নিন্দা জানিয়ে দেশটি তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে।

সোমবার তুর্কি উপ-প্রধানমন্ত্রী বেকির বোজদাগ এসব তথ্য জানান।

অন্যদিকে, মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তরেরকে প্রতিবাদে আঙ্কারায় হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছে। এই বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় তুরস্ক।

তুর্কি বিক্ষোভকারীরা এসময় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের পতাকা পুড়িয়ে দিয়ে এবং ইসরাইল-গাজা সীমান্তে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ করেন।

বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন প্রতিবাদী ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড বহন করেন। এসব ব্যানারে লেখা ছিল: ‘আল কুদুস মুসলমানদের’।

তারা পবিত্র যুদ্ধ এবং শহীদ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্লোগান দেয়।

একজন প্রতিবাদকারী আমেরিকানদের ‘কুকুর’ বলে সম্বোধন করে বলেন, ‘জেরুজালেম আমাদের, এটা আমাদের হবে।’

ইসরাইলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইমানুয়েল নাহশোন জানান, ইসরাইলে নিযুক্ত তুর্কি রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নেয়ার বিষয়ে তারা অবগত আছেন। তবে এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো নোটিস পাননি বলে তিনি জানিয়েছেন।

এর আগে, গাজা উপত্যকায় গণহত্যার প্রতিবাদে দক্ষিণ আফ্রিকা ইসরাইলে নিযুক্ত তার রাষ্ট্রদূতকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়।

গত সপ্তাহব্যাপী চলা ‘রিটার্ন মার্চ’ বা নিজ ভূমিতে ফেরার দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছেন ফিলিস্তিনিরা। সোমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জেরুজালেমে তার নতুন দূতাবাস উদ্বোধন করলে তারা তীব্র বিক্ষোভ দেখান।

জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থাপনের দিন সোবমার গভীর রাত পর্যন্ত ইসরাইলি হত্যাযজ্ঞে নিহততের সংখ্যা বেড়ে ৫৮ জনে দাঁড়িয়েছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু-কিশোরও রয়েছে। এছাড়াও, আহত হয়েছেন দু হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন