‘আলোচনার ক্ষেত্র রেখেই সহায়ক সরকারের রূপরেখা’

  22-01-2018 08:35PM

পিএনএস ডেস্ক : বিএনপির নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা প্রণয়নের কাজ শেষ পর্যায়ে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, আমাদের প্রস্তাবনার কাজ শেষের পথে। প্রস্তাবনা জাতির কাছে উপস্থাপন করব। এতে জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন থাকবে। রূপরেখার মাধ্যমে আমরা একটি জাতীয় আলোচনার ক্ষৈত্র তৈরি করার চেষ্টা করছি। এটিকে ভিত্তি ধরে জাতীয় ঐক্যমত্যের মাধ্যমে একটি নির্বাচনী ব্যবস্থায় পৌঁছানো যাবে।

আজ সোমবার জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলের মুক্তির দাবিতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আমির খসরু বলেন, আওয়ামী লীগের বন্ধুরা নাকি বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনকালীন সরকারের যে প্রস্তাবনা দেবে তারা সেটার অপেক্ষায় আছেন। আমি আশ্বস্ত হলাম, এটা তো সুখবর।

প্রথমবারের মতো শুনলাম তাদের গণতান্ত্রিক মনমানসিকতার পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে। তারা যদি বিএনপির সেই প্রস্তুাবনার জন্য অপেক্ষা করে থাকে তবে স্বাগত জানাই। বিএনপির নীতি নির্ধারক ফোরামের এ সদস্য বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার যেটি হবে সেটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের উদ্দেশ্যেই হবে।

আমাদের প্রস্তাবনার উদ্দেশ্যও সেটাই। এটা বিএনপি বা আওয়ামী লীগের কোনো বিষয় নয়, নির্বাচনকে নিয়ে জনগণের যে প্রত্যাশা সেটি পূরণ করতে হবে। কোনো দল বা গোষ্ঠীর প্রত্যাশা পূরণ করার জন্য বাংলাদেশ হয়নি। তিনি বলেন, প্রতিটি মানুষের প্রত্যাশা হচ্ছে। নির্বাচনকালীন সময়ে একটি নিরপেক্ষ সরকার থাকবে। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন থাকবে। একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাহী বিভাগ কাজ করবে। যার মাধ্যমে জনগণ নির্বিঘে ভোট দিতে ভোট কেন্দ্রে যাবে। তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে এবং তার প্রতিফলন ফলাফলে ঘটবে।

আমির খসরু বলেন, জনগণের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচিত সংসদ হবে, সরকার হবে। এর ব্যতিক্রম হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কোনো শক্তি সেটা করতে চাইলে তা প্রতিরোধ করতে হবে। প্রতিরোধ করে জনগণের রাষ্ট্রের ওপর যে মালিকানা তা ফিরিয়ে দিতে হবে। আমির খসরু বলেন, সরকার পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে ফের ক্ষমতা দখলের ছক আঁকছে। এজন্য তারা একটি নির্বাচনী প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এই সরকারের বিশেষ বিশেষ ব্যক্তি এ নির্বাচনী প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণকে বাইরে রেখে ক্ষমতায় যাওয়া।

খালেদা জিয়াকে কোর্টে ব্যস্ত রেখে বা সাজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া এ নির্বাচনী প্রকল্পেরই অংশ। তিনি বলেন, এ চক্রান্তের মধ্যে আছে দলের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় কারাগারে নেয়া ও গুম-খুন-রাজনৈতিক নিপীড়ন নির্যাতন অব্যাহত রাখা। এ চক্রান্তের মধ্যে আছে দলীয়ভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন, সেনাবাহিনীকে আইন-শৃঙ্খলার কাজ থেকে দূরে রাখা, সংসদ বহাল রাখার মাধ্যমে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি না করেই নির্বাচন অনুষ্ঠান।

কিন্ত জনগণ এবার সব ষড়যন্ত্রই প্রতিরোধ করবে। আমির খসরু বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে শত শত মানুষ গুম হচ্ছে। মানুষের বাক স্বাধীনতা, ভোটাধিকার ও জীবনের নিরাপত্তা কেড়ে নেয়া হয়েছে।

পুরো ব্যাংকিং সেক্টরকে লুটপাট করে শেষ করে দিয়েছে। দেশ থেকে লক্ষ কোটি টাকা চুরি করে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ। একদিন এসবের বিস্ফোরণ ঘটবে। যার দায়-দায়িত্ব এ অবৈধ সরকারকেই নিতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপির সভা সমাবেশের ক্ষেত্রগুলো সংকুচিত করে দেয়া হচ্ছে।

জুয়েলের মুক্তির জন্য সভা করতে হচ্ছে এ ধরনের একটি ছোট জায়গায়। আমাদের নাগরিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার কোথায় আছে এ থেকে বোঝা যায়। এখন থেকে আমরা মুক্তি চাইব না, মুক্ত হব। মুক্ত হওয়ার জন্য যে কাজগুলো করা দরকার, সেটি আমাদের অনুধাবন করে কাজে লাগাতে হবে। বক্তৃতা বা প্রতিবাদ সভার মাধ্যমে কিছু হবে না।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি জাকারিয়া আলম মামুনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু বক্তব্য দেন।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন