মওদুদ কে নিয়ে একি বললেন হাছান মাহমুদ!

  18-06-2018 05:10AM

পিএনএস ডেস্ক :নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে’ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের এমন অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি।

রবিবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত প্রেসব্রিফিংয়ে ড. হাছান মাহমুদ এই কথা বলেন। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মওদুদ আগে থেকেই একজন বিতর্কিত ব্যক্তি। তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এমন কথা বলে তিনি গল্প তৈরি করেছেন।

ড. হাছান মাহমুদ আরো বলেন, গতকাল ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে কিছু মনগড়া অভিযোগ করেছেন। বিষোদগার করেছেন। মওদুদ আহমদের ভালো পারদর্শিতা আছে সুন্দর করে গুছিয়ে মিথ্যা কথা বলার। সেই কারণেই তিনি সমস্ত সৈরাচার সরকারের খুব প্রিয় মানুষ ছিলেন। তিনি জিয়াউর রহমানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তিনি এরশাদ সাহেবেরও প্রধানমন্ত্রী এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এরশাদ সাহেবের পতনের মুহূর্তে এরশাদ তার হাতেই রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু যখন রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন তখন দুর্নীতির অভিযোগে তার শাস্তি হয়েছিল। কিন্তু পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের মেয়ের জামাতা হিসেবে পল্লী কবির অনুরোধের প্রেক্ষিতে তার শাস্তি মওকুফ করা হয়েছিল। তিনি বহু আগে থেকেই একজন বিতর্কিত মানুষ। তার ভূমিকা তার দলের মধ্যেই প্রশ্নবিদ্ধ। তার আচরণ তার দলের নেতারাই বলেন রহস্যজনক।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে যে আইনী লড়াই চলছে। এই আইনী লড়াইয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেল থেকে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে খালেদা জিয়া বাদ দিতে বলেছেন বলে আমরা পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তার ভূমিকা নিয়ে বিএনপির মধ্যে নানা প্রশ্ন।
প্রকৃত অর্থে তিনি তার এলাকায়ও বিতর্কিত। এই সমস্ত কারণে তিনি জনগণের মনযোগ আকর্ষণ করার জন্য এবং একই সঙ্গে বেগম জিয়ার মনযোগ আকর্ষণ করার জন্য তিনি গতকাল মনগড়া অভিযোগ উত্থাপন করেছেন।

তিনি বলেন, মওদুদ আহমদ বিতর্কিত রাজনীতিবিদ হলেও তিনি দেশের একজন সিনিয়র রাজনীতিবিদ, বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা, যেভাবেই হউক তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রীর আসনও তিনি গ্রহণ করেছিলেন। তাই তাকে নিরাপত্তা দেয়া আইন-শৃংখলা বাহিনীর দায়িত্ব। ব্যারিস্টার মওদুদের নিজ এলাকা কোম্পানিগঞ্জের নাজিরপুর ইউনিয়নে মানিকপুর গ্রামে তার যে বাড়ি সেই বাড়িতে তার সামনেই তার দলের নেতারা মারামারি করেছে।

যখন একজন নেতার সামনে তার দলের নেতারা মারামারি করে তখন তার উপর যদি কোন অনভিপ্রেত ঘটনা হয়। তখন সেই দোষ সরকারের উপর চাপানোর পারদর্শিততা রয়েছে বিএনপির। এর আগেও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্নস্থানে বিএনপি নিজেরা মারামারি করে তাদের সমাবেশ পণ্ড করেছে। আর সেই দোষও সরকারের উপর চাপিয়ে দেয়া চেষ্টা করেছে। এমন অবস্থায় বিএনপির নেতারা যখন মওদুদের সামনেই মারামারি করছিল তখন আইন-শৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে মওদুদ আহমদকে বাড়িতে অবস্থান করার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। সেটিকে মওদুদ আহমদ যেভাবে কাহিনী সাজালেন তাতে মনে হয় মওদুদ আহামদ রাজনীতি পাশাপাশি ছোটগল্পও লিখতে পারেন।

ইতিপূর্বে তিনি বেগম খালেদার স্বাস্থ্য নিয়ে যে পরামর্শ দিয়েছেন তাতে মনে হয় তিনি ব্যারিস্টারের পাশাপাশি ডাক্তারিও জানেন। ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, মওদুদ আহমদ অনেক বড় ব্যারিস্টার। তার মতো এতো বড় ব্যারিস্টার ভবিষ্যতেও হয় কি-না সন্দেহ। কারণ তিনি গুলশানের যে বাড়িটি আইনী লড়াইয়ে হেরে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন সেই বাড়িটি একজন অস্ট্রিয়ান মহিলার নামে ছিল।

এই মহিলার নাম ইন জে মারিয়া। ইন জে মারিয়ার মৃত্যুর তিন মাস পরের সই করা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সাবমিট করে ব্যারিস্টার মওদুদ ওই বাড়িটির মালিক হয়েছিলেন। যে ব্যারিস্টার মৃত্যুর পর কারো পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিতে পারেন তার মতো বড় ব্যারিস্টার অতীতেও ছিল না, ভবিষ্যতেও হবে না।

মওদুদ আহমদ দেশের একজন বিতর্কিত মানুষ, দলের মধ্যেও বিতর্কিত। সেই বিতর্ক থেকে মুখ ফেরানোর জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে কিছু মনগড়া অভিযোগ উপস্থাপন করেছেন।

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক রাষ্ট্রদূত নুরুল আলম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মুহিবুল আলম চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন