শেরপুরে শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আলু চাষিরা

  13-01-2018 07:52PM

পিএনএস, শেরপুর (বগুড়া) সংবাদদাতা : নানামুখি প্রতিকূলতা পিছু ছাড়ছে না আলু চাষিদের। বিগত দশ বছর এমন বিপর্যয়ের মুখে পড়েননি তাঁরা। মৌসুমের শুরু থেকেই আবহাওয়া প্রতিকূলে চলে যায়। অসময়ে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ধান কাটা-মাড়াইয়ে বাড়তি সময় লাগে। একইসঙ্গে সেই জমির পানি শুকাতে আরও কেটে যায় এক থেকে দেড় মাস। এরপরও সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়েই জমি প্রস্তুত করে আলু লাগানোর কাজ শেষ করেন। কিন্তু গেল দু’সপ্তাহ ধরে চলা শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তীব্র শীত ও কুয়াশার দাপট দীর্ঘ মেয়াদি হলে আলুর গাছ লেটব্লাইট রোগে আক্রান্ত হবে। তাই আলু ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। গতকাল শনিবার (১৩জানুয়ারি) বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকাঘুরে আলু চাষিদের সঙ্গে কথা বললে এমন তথ্য উঠে আসে।

উপজেলা কৃষি অধিদফর সূত্রে জানা যায়, প্রত্যেক বছরের অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয় রবি মৌসুম। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। আর এই রবি মৌসুমের অন্যতম ফসল হলো আলু। তবে মৌসুমের শুরু থেকেই আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এবার আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা পুরণ হয়নি। সূত্রটি জানায়, চলতি রবি মৌসুমে ৬হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু আলু চাষ হয়েছে ২হাজার ৮৩০হেক্টর জমিতে। যা অর্ধেকের কম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভোর থেকে দিনের অর্ধেক সময়জুড়ে বিভিন্ন এলাকার আলুর ক্ষেত কুয়াশায় মোড়ানো থাকছে। তীব্র শীতের দাপট অপেক্ষা করেই আলু চাষিরা ক্ষেত পরিচর্যায় চরম ব্যস্ত সময় পার করছেন। যতটা সম্ভব গায়ে শীতের পোশাক জড়িয়ে কোদাল হাতে ভোর থেতেই কৃষক ছুটে চলছেন নিজ নিজ জমিতে। সঙ্গে থাকছে শ্রমিক। কোদাল মারছেন আর আলু নালা ও আইল ঠিক করছেন তারা।

তবে বর্তমান আবহাওয়া নিয়ে চিন্তিত আলু চাষীরা। কথা হয় উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের তালতা গ্রামের আলু চাষি আবু সাঈদের সঙ্গে। তিনি জানান, প্রত্যেক বছর প্রায় ১০বিঘা জমিতে আলু লাগাই। এবার আবহাওয়ার কারণে মাত্র ৪বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি। নিয়ম অনুযায়ী শুরু থেকেই সবকিছু করছি। কিন্তু তীব্র শীত ও কুয়াশা ভীষণ চিন্তায় ফেলে দিয়েছে।

আব্দুল হান্নান নামের আরেক আলু চাষি বলেন, ‘একে তো আলু লাগাতে দেরি হয়ে গেছে, তার মধ্যে আবার চলছে শীতের দাপট। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কুয়াশা। সব মিলে এবারের আলু নিয়ে খুব টেনশনে আছি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খাজানুর রহমান বলেন, শৈত্যপ্রবাহে আলুর তেমন একটা ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে কুয়াশা দীর্ঘ মেয়াদি হলে আলুর গাছ লেটব্লাইট রোগে আক্রান্ত হবে। এতে গাছের পাতা লালচে বর্ণ ধারণ করবে। পাতা ও ডগায় পচন ধরে গাছগুলো নষ্ট হবে। তবে এখনও অবধি কোথাও থেকে এই রোগ ও ক্ষয়ক্ষতির কোন খবর পাওয়া যায়নি বলে এই কর্মকর্তা জানান।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন