চার সহযোগী হাত-পা-মাথা চেপে ধরে, বাবার গলায় ছুরি চালায় ছেলে

  31-03-2020 09:23PM

পিএনএস ডেস্ক : জয়পুরহাটের সুন্দরপুর এলাকায় চার সহযোগীকে সাথে নিয়ে বাবার গলা কাটার অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে। হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত চারজনকেই আটক করেছে পুলিশ।


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চার সহযোগীর মধ্যে বাবু শক্ত করে পা ধরে, মিজান বুকের উপড়ে ওঠে, দুলাল মাথা ও গলা ধরে আর ছেলে মাহবুব ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে বাবাকে। মৃত্যু নিশ্চিত করার পর মাহবুব ও মিজান লাশ দুলালের কাঁধে তুলে দেয়। দুলাল সামান্য দূরে গিয়ে লাশ ঝোপের মধ্যে ফেলে দেয়। এ সময় লিটন তার বাবার ব্যবহার করা ব্যাটারি চালিত ভ্যানটি ব্রিজের নিকট দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছিল।

এরপর তারা যে যার মতো করে বাড়ি চলে যায়। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিবেশীকে ফাঁসাতে গিয়ে এমন লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে জয়পুরহাটের আমদই ইউনিয়নের সুন্দরপুর নয়া পাড়া গ্রামে। তবে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত প্রত্যেককেই গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।

জয়পুরহাট সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান মামলা সূত্রে জানান, সুন্দরপুর নয়া পাড়া গ্রামের বাসিন্দা দরিদ্র ভ্যান চালক আব্দুল জলিল মাত্র আড়াই শতক জমির উপর একটি বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। কিন্তু অভাবের তাড়নায় অনেক আগেই বাড়িটি প্রতিবেশী মোজাম হাজির নিকট রেজিস্ট্রি ছাড়াই বিক্রি করে দেন। এ নিয়ে মোজাম হাজির ছেলের সাথে আব্দুল জলিলের ছেলে মাহবুর রহমানের প্রায় সময় ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো। এরই জের ধরে ইসমাইল নামে এক পরিচিত মানুষের বুদ্ধি শুনে বাবার হত্যার পরিকল্পনা করে মাহবুব। বিনিময়ে ওই বাড়িটি তার হাত ছাড়া হবে না, উল্টো হত্যার দায়ে মোজাম হাজীর উপর মামলা করে ১০ লাখ টাকা আদায় করা যাবে। যেমন চিন্তা, তেমন কাজ। মাহবুবব ঠিক করে ওই গ্রামেরই আব্দুর রশিদের ছেলে মিজানুর রহমান (২৫), মৃত. তহির উদ্দীনের ছেলে দুলাল হোসেন (৪০), আব্দুল মজিদের ছেলে লিটন মন্ডল (২৩) ও আব্দুল মজিদের ছেলে বাবু মন্ডলকে (২৮)। মাহবুব চুক্তির ১লাখ টাকার মধ্যে ৫ হাজার টাকা অগ্রিম বাবুকে দিয়ে মোট ৪ জনকে ঠিক করে তার বাবাকে হত্যা করার জন্য।

সর্বশেষ ২৭ মার্চ রাত টার দিকে আব্দুল জলিল ভ্যান নিয়ে জয়পুরহাট থেকে নিজ গ্রামের ত্রিমোহনী ব্রিজের কাছে পৌঁছলে তার ছেলে মাহবুবসহ ৫জন তাকে গলা কেটে হত্যা করে। এ ঘটনায় অনেক খোঁজাখুজির পর পরের দিন দুপুরে ত্রিমোহনী ব্রিজের নিচে আব্দুল জলিলের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে জয়পুরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মরত (ওসি) আব্দুল লতিফ খাঁন জানান, পুলিশের সন্দেহ অনুযায়ী প্রথমে নিহতের ছেলেকে আটক করা হলে সে তার বাবাকে হত্যার দায় স্বীকার করে। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত একই এলাকার ওই ৪ জনকে সোমবার (৩০ মার্চ) রাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদের প্রত্যেককে মঙ্গলবার দুপুরে জয়পুরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেওয়া হলে বিচারক গোলাম মাহফুজের কাছে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি জবানবন্দি দেয় তারা। এদের মধ্যে দুলাল ও মিজানুরের ১দিন করে রিমান্ড মঞ্জর করেন আদালত।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন