কাঠখোদাই শিল্পের নেতৃত্বে সৌদি নারীরা

  25-12-2024 05:53PM

পিএনএস ডেস্ক: মরুপ্রধান সৌদি আরবের বাহা অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও মনোরম পরিবেশ পর্যটক ও স্থানীয়দের আকৃষ্ট করে। এটি এখন পরিচিতি পাচ্ছে নতুন পরিচয়ে। অঞ্চলটিতে ঐতিহ্যবাহী কাঠখোদাই শিল্পে নতুন জীবন লাভ করছেন দেশটির নারীরা।

বাহা অঞ্চলের শীতল আবহাওয়া, পাহাড়ি দৃশ্য এবং ঐতিহ্যবাহী কাঠখোদাই শিল্প এই এলাকাকে বিশেষভাবে বিখ্যাত করেছে। একসময় এই শিল্প হারিয়ে যেতে বসেছিল, তবে বর্তমানে একদল উচ্চশিক্ষিত সৌদি নারী তাদের সৃজনশীলতা ও আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে এই শিল্পকে পুনর্জাগরিত করছেন।

কাষ্ঠশিল্প সৌদি আরবের ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাহার ঐতিহ্যবাহী ভবনগুলোর অলংকৃত কাঠের দরজা ও স্তম্ভে এই শিল্পের ছাপ স্পষ্ট। নারীরা কাঠখোদাইয়ের তিনটি বিশেষ পদ্ধতিতে কাজ করছেন—আঁচড় কেটে, পুড়িয়ে এবং রং লাগিয়ে। এই শিল্পকর্ম শুধু সৌন্দর্যই নয়, আয় তৈরির সুযোগও করে দিচ্ছে।

নারীদের এই দক্ষতা বৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রাখছে সাউদি অ্যারাবিয়ান সোসাইটি ফর কালচার অ্যান্ড আর্ট। তাদের উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালাগুলোতে অংশগ্রহণকারীরা কাঠখোদাই ও অলংকরণশিল্পে পারদর্শিতা অর্জন করছেন।

এই কর্মশালার পরিচালনায় রয়েছেন বিখ্যাত ক্যালিগ্রাফার ও ভিজ্যুয়াল আর্টিস্ট আবদুল আজিজ আল মাজথেল। তিনি নারীদের হাতে-কলমে শিখিয়ে দিচ্ছেন কীভাবে ইসলামী ভাবধারায় জ্যামিতিক ও পুষ্পময় অলংকরণ তৈরি করতে হয়। পাশাপাশি সুপারভাইজার লায়লা আল হামিদ প্রশিক্ষণার্থীদের প্রাচীন অলংকরণের ধরন ও তা কাঠে ফুটিয়ে তোলার প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছেন।

প্রশিক্ষণার্থী আইদাহ আল জাহরানি বলেন, এই শিল্প শুধুই সৃজনশীলতার প্রকাশ নয়, এটি আয়ের দারুণ একটি উৎস। আমাদের পূর্বপুরুষরা এই শিল্পের মাধ্যমে ইতিহাস, সময় ও স্থানকে একসূত্রে গেঁথেছিলেন।

আল-বাহা সৌদি আরবের একটি ঐতিহ্যবাহী প্রদেশ, যার আয়তন ৯ হাজার ৯২১ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় তিন লাখ ৩৯ হাজার। এই অঞ্চলের রাঘাদান জাতীয় উদ্যানসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনা পর্যটকদের আকর্ষণ করে।

এই অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী কাঠখোদাই শিল্পের পুনর্জাগরণ শুধু স্থানীয় সংস্কৃতিকে নতুনভাবে তুলে ধরছে না, বরং বিশ্বমঞ্চে সৌদি নারীদের প্রতিভার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন