পিএনএস ডেস্ক : হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের সামনে জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের বিতর্কে জড়ানোর বিষয়টি সুকৌশলে সাজানো অর্থাৎ পূর্বপরিকল্পিত ছিল বলে দাবি করেছেন সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা স্কট রিটার। তার দাবি, জেলেনস্কির মানহানি করে ক্ষমতাচ্যুত করার কৌশল হিসেবেই জনসম্মুখে ওইভাবে বাগবিতণ্ডায় জড়ান ট্রাম্প।
স্কট বলেন, বৈঠকে ট্রাম্পের সঙ্গে তর্ক করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট নিজের পায়ে কুড়াল মেরেছেন। আর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ায় জেলেনস্কি এবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের পদ হারাতে যাচ্ছেন বলেও দাবি করেন সাবেক এই মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
সাবেক এই মার্কিন গোয়েন্দার দাবি, শুক্রবার ওভাল অফিসে বৈঠকটি ছিল জেলেনস্কিকে অসম্মানিত করা ও নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় থাকায় অসঙ্গতিগুলোর মুখোমুখি দাঁড় করানোর প্রস্তুতি।
এরই মধ্যে জেলেনস্কির পদত্যাগের দাবি তুলেছেন এক মার্কিন সিনেটর। যদিও এর জবাবে জেলেনস্কি জানান, কেবল ইউক্রেনের জনগণ চাইলেই পদ ছাড়বেন তিনি।
২০১৯ সালে জেলেনস্কি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। গত বছরের মে মাসে তার মেয়াদ শেষ হয়। তবে যুদ্ধ চলমান থাকায় সামরিক আইনের অধীনে দেশটিতে নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে।
রিটারের মতে, ওয়াশিংটন জেলেনস্কির ওপর বিরক্ত। ওভাল অফিসে বৈঠকের কয়েকদিন আগেই জেলেনস্কিকে স্বৈরশাসক আখ্যা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
রিটার বলেন, ওভাল অফিসের ঘটনার পর ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে সম্পর্ক এক প্রকার ভেঙে পড়েছে। বিপরীতে শান্তি প্রচেষ্টায় কিছু বিষয়ে মতবিরোধ থাকলেও রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বেড়েছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার শান্তি চুক্তি অর্জনের সবচেয়ে বড় বাধা জেলেনস্কি। তাকে অপসারণ করতে হতো এবং সেই কৌশলের অংশ হিসেবেই এটি করা হয়েছে। জেলেনস্কির অপসারণ ইউক্রেনের রাজনৈতিক পতনের সূচনা হতে পারে বলেও মন্তব্য রিটারের।
এদিকে, নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে বলেছে, ট্রাম্প যেকোনো মূল্যে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চান। প্রয়োজনে মস্কোর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত খারিজ করতে ও ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়া থেকে সরে আসতেও পারেন ট্রাম্প।
তবে যুক্তরাষ্ট্র হাত ছাড়লেও ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব। দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে বলেছে, শুক্রবারের ঘটনার পর জেলেনস্কির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
এরই মধ্যে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা খাত উন্নয়নে ২২৬ বিলিয়ন পাউন্ড ঋণ দেওয়ার বিষয়ে চুক্তি করেছে যুক্তরাজ্য। কিয়েভে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রোববার লন্ডনে ইউরোপীয় নেতাদের সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে।
এসএস
‘জেলেনস্কি-ট্রাম্পের বিতর্ক ছিল পূর্বপরিকল্পিত’
02-03-2025 07:05PM
