জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারের রিভিউ শুনানি আজ

  20-02-2025 10:30AM

পিএনএস ডেস্ক: মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের রিভিউ শুনানি বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আপিল বিভাগের বৃহস্পতিবারের কার্যতালিকায় রিভিউ আবেদনটি শুনানির জন্য ৮ নম্বর ক্রমিকে রাখা হয়। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে।

আদালতে জামায়াত নেতা আজহারের পক্ষে শুনানি করবেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক। তাকে সহযোগিতা করবেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন।

এর আগে, গত ২৩ জানুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের শুনানি পিছিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।

মানবতাবিরোধী অপরাধ অভিযোগে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ টি এম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানির পর ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর এ টি এম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

পরবর্তীতে আপিল বিভাগের রায় রিভিউ চেয়ে ২০২০ সালের ১৯ জুলাই আবেদন করেন এ টি এম আজহারুল ইসলাম। এখন সেই রিভিউ আবেদন শুনানি ও নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে।

২০২০ সালের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিভিউ আবেদন করেছিলেন এ টি এম আজহারুল ইসলাম। ২৩ পৃষ্ঠার পুনর্বিবেচনার এ আবেদনে মোট ১৪টি যুক্তি উপস্থাপন করা হয়।

২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর এ টি এম আজহারকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়ে যায় দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর বিরুদ্ধে আপিলে শুনানির পর ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।

২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ে আনীত অভিযোগ ২ নম্বর, ৩ নম্বর এবং ৪ নম্বর অভিযোগে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পেয়েছেন আজহার। এ ছাড়া ৫ নম্বর অভিযোগে অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অমানবিক অপরাধের দায়ে ২৫ বছর ও ৬ নম্বর অভিযোগে নির্যাতনের দায়ে ৫ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। আপিল বিভাগের রায়ে ২, ৩, ৪ (সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে) ও ৬ নম্বর অভিযোগের দণ্ড বহাল রাখা হয়। আর ৫ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়।

২০২০ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। এরপর রিভিউ করেন এ টি এম আজহার।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা-হত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং বাড়িঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো ৯ ধরনের ৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রমের যাত্রা শুরু হয়েছিল।

এখানে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান এবং দলটির নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাশেম আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। পরে রায়ের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত আপিল ও রিভিউয়ের পর তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ইসলামিক স্কলার দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকেও আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কারাবন্দি অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এখানে প্রায় অর্ধশত মামলায় রায় হয়।

তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই বিচার শুরু থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। ট্রাইব্যুনালের বিচারকসহ অন্যান্যদের একটি স্কাইপি কেলেঙ্কারি বিতর্কের সৃষ্টি করে। পাশাপাশি আসামির পক্ষে সাফাই সাক্ষীকে অপহরণসহ নানা অভিযোগ ছিল ওই বিচারিক কার্যক্রমে। আসামি পক্ষে আইনজীবী ও তাদের স্বজন শুভাকাঙ্ক্ষীরা ওই বিচারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও তাতে কোন কর্ণপাত করেনি সংশ্লিষ্টরা। সূত্র: বাসস

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন