জামিনের পরও নির্যাতন করে টাকা আদায়, জড়িত পুলিশদের বিষয়ে রায় আজ

  19-02-2025 09:02AM

পিএনএস ডেস্ক: শরীয়তপুরের এক ছিনতাই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও কয়েকজন আসামি ও তাদের স্বজনদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে ৭২ লাখ টাকা আদায়ের ঘটনায় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিষয়ে হাইকোর্টের জারি করা সুয়োমোটো রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ শুনানি শেষে আজ রায়ের জন্য রেখেছেন।

এর আগে সুয়োমোটো রুল জারি করার সময়ে আদালত বলেছিলেন, এ মামলায় আমরা আসামিদের আগাম জামিন দিয়েছি। সেই জামিনের ল’ইয়ারস সার্টিফিকেটও ছিড়ে ফেলেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। শুধু ছিড়েই ফেলেননি, আসামিদের গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছেন। এমনকি রিমান্ডের আবেদন দিয়েছেন। পাশাপাশি আসামিদের গ্রেফতার করে নির্যাতন করেছেন। এত ধৃষ্টতা দেখানোর সাহস পুলিশ পায় কোথায়? এ ধরনের কর্মকাণ্ড করার পর এখন তারা সবকিছু অস্বীকার করছেন।

ওই সময় শুনানিতে আদালতে নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ৭২ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগে তাদের দুজনকেই সাময়িক বরখাস্ত করেছে পুলিশ প্রশাসন।

ভুক্তভোগী আসামিদের পক্ষে আইনজীবী মুজিবুর রহমান এরই মধ্যে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার এদিন তার স্থলাভিষিক্ত হয়ে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এ কে এম খলিলুল্লাহ কাশেম। তিনি আদালতের শুনানির বিষয়ে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অনেক ভালো কাজ করছে। দু’একজন সদস্যের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের জন্য পুরো বাহিনীকে দায়ী করা ঠিক নয়। কিন্তু পুলিশ বাহিনীর দু’একজন সদস্যের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে দুর্নামের ভাগীদার হতে হয় সবাইকে।

তিনি আরও বলেন, জামিনে থাকার পরও তাদের ধরে নিয়ে শুধু নির্যাতনই করেনি, তাদের রিমান্ডও চাওয়া হয়েছে। আদালত প্রশ্ন তোলেন, আসামিদের জামিন হয়েছে কি হয়নি এটাতো অনলাইনে দেখা যায়। এরপরও কেন তাদের পুলিশের কাস্টডিতে দেওয়া হলো। কেন রিমান্ডে নেওয়া হলো।

অ্যাডভোকেট এ কে এম খলিলুল্লাহ কাশেম বলেন, ছিনতাই মামলায় সাতজন আসামির উচ্চ আদালত থেকে জামিন হয়। এ জামিনপ্রাপ্তির পরও সাতজনের মধ্যে দুইজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের নির্যাতন করে টাকা আদায় করে আদালতে সোপার্দ করেন। অন্যদিকে আদালত জামিনের তথ্য যাচাই-বাছাই না করে আসামিদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন। এ ঘটনায় পত্রিকার প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে আমি আবার আদালতে উপস্থাপন করি। আদালত শুনানি নিয়ে বিচারকসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে তলব করেন।

তিনি আরও বলেন, একই সঙ্গে উচ্চ আদালতের জামিনাদেশ থাকার পরও আসামিদের জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে তলব করা হয়। গত১৬ জুলাই তাদের সশীররে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা করতে বলা হয়। পাশাপাশি পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও শরীয়তপুরের পুলিশ সুপারকে (এসপি) এ বিষয়ে অবস্থান ব্যাখ্যা করতে বলা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তারা নির্ধারিত দিনে আদালতে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। এর পর মঙ্গলবার সর্বশেষ চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ বুধবার রায়ের জন্য রেখেছে হাইকোর্ট।

পিএনএস/রাশেদুল আলম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন