পিএনএস ডেস্ক: বর্তমানে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে স্মার্টফোন অপরিহার্য হলেও এর ব্যবহার নিয়ে প্রচলিত অনেক ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। যেগুলোর মধ্যে কিছু কিছু আবার ক্ষতিকরও হতে পারে।
এখানে তেমনই ১২টি জনপ্রিয় মিথ এবং তাদের বাস্তব সত্য তুলে ধরা হলো:
১. ভেজা ফোন চালের মধ্যে রাখা:
অনেকেরই ধারণা, পানিতে ভেজা ফোন চালের মধ্যে রাখলে শুকিয়ে যায়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ফোনটি শুকাবে না; বরং এটি ক্ষতির কারণ হতে পারে। চালের দানার ধুলিকণা ফোনের ভেতরে ঢুকে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ভেজা ফোনটি বরং খুলে রেখে বাতাসে শুকানোই নিরাপদ।
২. অ্যাপ বন্ধে ব্যাটারি সাশ্রয়:
অনেকেই মনে করেন, ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ বন্ধ করলেই বুঝি ব্যাটারি সাশ্রয় হয়। কিন্তু না, বরং এতে বেশি শক্তি ব্যয় হয়। ফোন নিজেই ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ ঠিকমতো ম্যানেজ করে। ব্যাটারি সাশ্রয়ের জন্য ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপের কার্যক্রম সীমিত রাখুন।
৩. রাতে চার্জ দিলে ব্যাটারি নষ্ট হয়:
আধুনিক স্মার্টফোনে চার্জিং অপটিমাইজেশন থাকে। এগুলো ৮০% পর্যন্ত চার্জ হয়ে থেমে যায় এবং আপনার ঘুমানোর সময়ের মধ্যেই পূর্ণ চার্জ হয়।
৪. একই ব্র্যান্ডের চার্জারই নিরাপদ:
অনেকেরই বিশ্বাস, কেবল একই ব্র্যান্ডের চার্জারই নিরাপদ। এক্ষেত্রে বিশ্বস্ত তৃতীয় পক্ষের চার্জারও নিরাপদ হতে পারে। তবে সস্তা এবং অবিশ্বস্ত চার্জার এড়িয়ে চলুন। বিশেষ করে ফাস্ট চার্জিংয়ের ক্ষেত্রে।
৫. অফিসিয়াল অ্যাপ স্টোরের অ্যাপ সব সময় নিরাপদ:
অফিসিয়াল অ্যাপ স্টোরের অ্যাপসই সব সময় নিরাপদ নয়। গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোরেও মাঝে মাঝে ম্যালওয়্যার পাওয়া যায়। তাই অ্যাপ ইনস্টল করার আগে রিভিউ এবং রেটিং দেখে নিন।
৬. বেশি মেগাপিক্সেল মানেই ভালো ছবি:
অনেকেই মানেন যে, বেশি মেগাপিক্সেল মানেই ভালো ছবি। আসলে মেগাপিক্সেলের চেয়ে ক্যামেরার সেন্সর এবং প্রসেসিং ক্ষমতাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই শুধু মেগাপিক্সেলের ভিত্তিতে ফোন নির্বাচন করবেন না।
৭. এয়ারপ্লেন মোডে ফোন দ্রুত চার্জ হয়:
এয়ারপ্লেন মোডে চার্জিং একটু দ্রুত হতে পারে, কিন্তু পার্থক্য খুবই সামান্য। আধুনিক ফোন এমনিতেই দ্রুত চার্জ হয়।
৮. ব্লু লাইটই ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়:
ব্লু লাইট নয়, বরং স্ক্রিনের আলো সাধারণভাবেই ঘুমের জন্য ক্ষতিকর। ঘুমানোর আগে স্ক্রিন টাইম কমান এবং রিল্যাক্সিং কাজে মন দিন।
৯. ফাইভ-জি ক্ষতিকর:
গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, ফাইভ-জি এবং মোবাইল নেটওয়ার্কের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করে না।
১০. পাবলিক ওয়াইফাই সবসময় অনিরাপদ:
আধুনিক এনক্রিপশন স্ট্যান্ডার্ড পাবলিক ওয়াইফাইকে তুলনামূলকভাবে নিরাপদ করেছে। তবে সংবেদনশীল অ্যাকাউন্টে লগইন করা বা সন্দেহজনক নেটওয়ার্ক এড়িয়ে চলা উচিত।
১১. বিমানে এয়ারপ্লেন মোড বাধ্যতামূলক:
বিমানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে এয়ারপ্লেন মোড বাধ্যতামূলক নয়। কেননা, ফোনের সিগন্যাল প্লেনের যন্ত্রপাতিতে সমস্যা করে না। তবে এয়ারপ্লেন মোড পাইলটের জন্য সিগন্যাল বিরক্তি কমায় এবং ফোনের ব্যাটারি সাশ্রয় করে।
১২. ফোন রিস্টার্টের প্রয়োজন নেই:
নিয়মিত ফোন রিস্টার্ট করা প্রয়োজন। এটি ক্যাশ পরিষ্কার করে, ছোটখাটো ত্রুটি মেরামত করে এবং ফোনের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। তাই সপ্তাহে অন্তত একবার রিস্টার্ট করা ভালো।
আসলে, স্মার্টফোন সম্পর্কে সঠিক তথ্য জেনে নিলে তা আরও কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যায়। সুতরাং, ভুল ধারণা এড়িয়ে চলুন এবং আপনার ডিভাইসের যত্ন নিন।
এসএস
স্মার্টফোন ব্যবহারে যেসব মিথ চরম ক্ষতি বয়ে আনে
09-12-2024 08:30PM