বিয়ের দুদিন আগে যুবক নিখোঁজ, কবরস্থানে মিলল ঝুলন্ত মরদেহ

  02-02-2025 09:08PM

পিএনএস ডেস্ক: মাহমুদুল হাসান (২৮) নামে এক যুবকের বিয়ের দিন ঠিক করা হয়েছিল গত শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি)। এর দুই দিন আগে হঠাৎ করেই তিনি নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছে। তবে কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। অবশেষে নিখোঁজের চারদিন পর তাকে পাওয়া গেছে। তবে জীবিত নয়, মৃত অবস্থায়।

জয়পুরহাট সদর উপজেলার বম্বু ইউনিয়নের সতিঘাটা নামক এলাকার একটি কবরস্থান থেকে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

মাহমুদুল হাসানের ডাকনাম পিপাস। তার বাড়ি আক্কেলপুর উপজলোর রুকিন্দীপুর গ্রামে। তিনি জেলা শহরের ধানমন্ডি এলাকার বসবাস করতেন। একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে চাকরি করতেন পিপাস।

পুলিশ ও পিপাসের স্বজনরা জানান, এক মেয়ের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের দিন-তারিখও ঠিকঠাক হয়েছিল। গত শুক্রবার তার বিয়ের কথা ছিল। বিয়ের দুই দিন আগে সকাল ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হন, রাত ১১টা পর হলেও তিনি বাসায় ফিরেননি। সে সময় তার মোবইলে যোগাযোগের চেষ্টা করে পরিবার। কিন্তু কোনো কথা হয়নি। হঠাৎ তিনি নিখোঁজ হওয়ায় পরিবার থানায় ৩০ জানুয়ারি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার নিখোঁজের বিষয়টি নিয়ে বন্ধুমহল ও স্বজনেরা পোস্ট দেন।

তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাওয়া গেছে দাবি করে চিকিৎসা করাতে হবে বলে একটি চক্র পরিবারের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। রোববার দুপুরে সতিঘাটা এলাকার একটি কবরস্থানে গাছে ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। পরে মরদেহটি মাহমুদুল হাসান পিপাসের বলে শনাক্ত করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

নিহত মাহমুদুলের বন্ধু হাসিবুর রহমান বলেন, সাত বছর প্রেমের সম্পর্ক থাকার পর গত ৩১ জানুয়ারি বিয়ে ঠিক হয়েছিল। সে বিয়েতে আমাদের বন্ধু-বান্ধবদের বিয়ের দাওয়াত করেছিল। বিয়ের দুই দিন আগে নিখোঁজ হয়। এ কারণে আর বিয়ে হয়নি। আজকে আমরা তার ঝু্লন্ত মরদেহ পেয়েছি।

আরেক বন্ধু সোহান হোসেন বলেন, গত বুধবার দুপুরে মাহমুদুলের সঙ্গে শহরের বারোঘাটি পুকুরপাড়ে দেখা হয়েছিল। গল্প করেছি, আড্ডা দিয়েছি। সে বিয়ের খরচ নিয়ে চিন্তায় ছিল। আমরা কয়েকজন বন্ধু তাকে সাহস জুগিয়েছি। এরপর তার সঙ্গে আর দেখা ও কথা হয়নি। এটি আত্মহত্যা নয়, এটি পরিকল্পিত হত্যা। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

নিহতের বড় ভাই মেসবাহুর রহমানের মোবইলে কল করলে তার বন্ধু রুহুল আমিন কলটি রিসিভ করেন। তিনি বলেন, প্রথমে আমরা থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলাম। অভিযোগের কপি র‌্যাব ক্যাম্পে দেওয়া হলে তারা জিডি করার পরামর্শ দেন। এরপর আমরা থানায় একটি জিডি করেছি। নিখোঁজ থাকা অবস্থায় তার সর্বশেষ লোকেশন ছিল সদরের ধারকি এলাকায়। ওই এলাকায় খোঁজ করে পাওয়া যায়নি। এরপর তো তার লাশ পাওয়া গেল। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।

জয়পুরহাট থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. বদিউজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকা মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি নিখোঁজ ছিলেন। নিখোঁজের বিষয়ে থানায় জিডি করা হয়েছে। তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। লাশটি হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্ত না হলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে, তদন্ত চলছে। মরদেহটি তিন দিন আগের হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন