যৌথবাহিনীর হেফাজতে যুবদল নেতা নিহতের ঘটনায় মামলা

  05-02-2025 04:34PM

পিএনএস ডেস্ক: কুমিল্লায় বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলাকে হত্যার ঘটনায় ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। এতে আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নিহতের স্ত্রী ইয়াসমিন নাহার বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় এ হত্যা মামলা করেন।

মামলার এজাহার নামীয় আসামিরা হলেন, জেলার আদর্শ সদর সদর উপজেলার পাঁচথুবি ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর (পান্ডানগর) গ্রামের সাইফুল ইসলাম, নিহত তৌহিদুলের প্রতিবেশী তানজিল উদ্দিন, নাজমুল হাসান টিটু, খাইরুল হাসান মাহফুজ, সাইদুল হাসান সবুজ ও একই উপজেলার বামইল গ্রামের সোহেল। এতে অজ্ঞাতনামা আরো ২০/২৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, অভিযুক্তদের সঙ্গে তৌহিদুলের পরিবারের জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিশ হয়। কিন্তু বিরোধ শেষ হয়নি। এ নিয়ে তৌহিদুলকে হত্যার হুমকি দেয় আসামিরা।

গত ৩০ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাতে মামলায় অভিযুক্তরা পূর্ব বিরোধের জের ধরে ২০/২৫ জন সিভিল পোশাকধারী এবং সেনাবাহিনীর মতো পোশাক পরিহিত লোক বাড়িতে গিয়ে যুবদল নেতা তৌহিদ ও প্রতিবেশী লুৎফুর রহমানকে আটক করে নিয়ে যায়।

পরদিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে একই ব্যক্তিরা আবারও আহত তৌহিদ ও লুৎফুরকে নিয়ে বাড়িতে এসে ঘরে তল্লাশি করে। এ সময় আটক লুৎফুর রহমানকে ছেড়ে দিলেও তৌহিদকে নিয়ে তারা চলে যায়। পরে তারা সংকটাপন্ন অবস্থায় তৌহিদকে গোমতী বাঁধের ঝাঁকুনি পাড়ায় ফেলে যায়।

মামলায় আরও বলা হয়, এ ঘটনায় বাড়ির সবাই আতঙ্কিত হয়ে তৌহিদুলকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। সেদিন তৌহিদুলের ভাই আবুল কালাম আজাদের মোবাইল নম্বরে পুলিশ ফোন করে জানায়, তৌহিদকে গোমতি নদীর বেড়িবাঁধ এলাকায় অচেতন অবস্থায় পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে। এতে তৌহিদুলের পরিবারের লোকজন কুমিল্লা সদর হাসপাতালে ছুটে যায়। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা—নিরীক্ষা করে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।

রাজনীতির পাশাপাশি চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি শিপিং কম্পানিতে চাকরি করতেন তৌহিদুল। গত ২৬ জানুয়ারি বাধ্যর্কজনিত কারণে তার বাবা মারা যাওয়ার খবরে তিনি বাড়ি এসেছিলেন। মারা যাওয়ার দিন ছিল বাবার কুলখানির আয়োজন। দুই দফায় জানাজা শেষে তাকে বাবার কবরের পাশে সমাহিত করা হয়েছে।

মামলার বাদী ও তৌহিদুলের স্ত্রী ইয়াসমিন নাহার বলেন, ‘চার শিশুসন্তান নিয়ে আমি বিধবা হলাম। আমার স্বামী পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের শিকার। আমরা সরকারের কাছে ন্যায়বিচার চাই।’

তৌহিদুলের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘যাদের মামলায় আসামি করা হয়েছে-এর বাইরেও কেউ কেউ থাকতে পারেন। এখানে রাজনৈতিক কোনো বিষয় আছে কিনা, তাও তদন্ত করে পুলিশ বের করবে বলে আশা করি।’

কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, ‘নিহতের স্ত্রী অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। ঘটনায় অভিযুক্তদের কেউই এলাকায় নেই। তাদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।’

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন