জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে নারী খেলোয়াড়কে ধর্ষণ!

  26-11-2018 04:21PM

পিএনএস ডেস্ক : এক নারী ভারোত্তোলক ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে খোদ ভারোত্তলন ফেডারেশনের এক অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে। জাতীয় ক্লাব ভারোত্তলনে সোনাজয়ী এই নারী ভারোত্তোলক ঘটনার পর থেকে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি এখন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি।

নির্যাতিতা ভারোত্তোলকের মামার ভাষ্যমতে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পুরোনো ভবনের চারতলায় ধর্ষণের শিকার হয় তাঁর ভাগ্নি। তিনি এ ঘটনায় ভারোত্তলন ফেডারেশনের অফিস সহকারী সোহাগ আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর ভাষ্য, ‘কয়েক বছর আগে আমি নিজেই ওকে এনেছিলাম ভারোত্তোলক বানানোর জন্য। ১৫ সেপ্টেম্বর খেলা ছিল। যার জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর অনুশীলনের জন্য ডেকে আনা হয়। দেখানো হয়েছিল চাকরির লোভও। পুরোনো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চারতলায় ডেকে এনে রুম লাগিয়ে দেওয়া হয়।

আমার ভাগ্নির সর্বনাশ করেছে সোহাগ আলী। ওকে রুমে নিয়ে আসতে সহায়তা করেছে কর্মচারী মালেক ও আরেকজন নারী ভারোত্তোলক।’
খেলা থাকলে ঢাকার বাইরে থেকে আসা খেলোয়াড়েরা সাধারণত জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে অবস্থান করে থাকেন। সেই নারী ভারোত্তোলক গত ১৩ সেপ্টেম্বর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনে অবস্থান করছিলেন।

ভারোত্তোলকের মামার তথ্যমতে, ঘটনাটি তাঁরা জেনেছেন অনেক পরে। বাড়ি ফেরার পর হতাশাগ্রস্ত নারী ভারোত্তোলক ব্যাপারটি কাউকে বলেননি। ঘটনার পর গত ১০ অক্টোবর তিনি বাড়ির পেছনের পুকুরে ডুবে আত্মহত্যা করার চেষ্টা চালালে পুরো বিষয়টি সামনে আসে।
আত্মহত্যার চেষ্টা চালানোর পর থেকে গ্রামে কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়লে ২৩ অক্টোবর গ্রাম থেকে ঢাকায় এনে মানসিক হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয় তাঁকে। একদিন পরে নেওয়া হয় শয্যায়। সেখানেই এখন চলছে তাঁর চিকিৎসা।

ওই হাসপাতালের একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বড় ধরনের শক থেকে মেয়েটির প্রায় পাগলপ্রায় অবস্থা। শুরুতে অবস্থা খারাপ থাকলেও এখন অবস্থা উন্নতির দিকেই।’

এত বড় ঘটনার পরও নারী ভারোত্তোলকের পরিবার কোনো মামলা করেনি। এর কারণ সম্পর্কে মেয়ের মামা বলেন, ‘মামলা হলে বাড়িতে থানা-পুলিশ যাবে। গ্রামে মুখ দেখানো যাবে না। এ ছাড়া টাকা-পয়সার ব্যাপার তো আছেই।’

ফেডারেশনে এসে অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। ফেডারেশনের সহ সভাপতি উইং কমান্ডার মহিউদ্দিন আহমেদ পুরো বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠনের কথাও জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা দিয়ে দিয়েছি। তাঁরা আমাকে বললেন যে তাঁরা মামলা করতে চান। আমি জানিয়েছি, এটা আপনাদের ইচ্ছা। পরে অভিযোগ ওঠা অফিস সহাকারী নাম-ঠিকানাও নিয়েছেন আমাদের কাছ থেকে। আমরা নিজেরাও তদন্ত কমিটি গঠন করেছি।’

ফেডারেশন জানিয়েছে, অভিযোগে থাকা সোহাগের চাকরি তদন্তকালীন সময়ে স্থগিত থাকবে। গতকাল পর্যন্ত তাঁকে দেখা গেলেও আজ থেকে তিনি লাপাত্তা। ফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না তাঁকে।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন