শিক্ষকরা আন্তরিক হলে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করা সম্ভব

  06-05-2018 03:58PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে আজ (৬ মে)। অভিন্ন প্রশ্নপত্রে ২০১৮ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা গত এক ফেব্রুয়ারি শুরু হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় ব্যবহারিক পরীক্ষা, যা শেষ হয় ৪ মার্চ।

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এ বছর ২০ লাখ ৩১ হাজার ৮৯৯ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে, যাদের মধ্যে ছাত্র ১০ লাখ ২৩ হাজার ২১২ ও ছাত্রী ১০ লাখ আট হাজার ৬৮৭ জন। এ বছর ১০টি বোর্ডের তিন হাজার ৪১২টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মোট ২৮ হাজার ৫৫১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।

সাধারণত আট বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৬ লাখ ২৭ হাজার ৩৭৮ জন। এখানে ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীর সংখ্যা বেশি। এছাড়া দাখিলে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল দুই লাখ ৮৯ হাজার ৭৫২ জন। এসএসসি ভোকেশনালে পরীক্ষার্থী ছিল এক লাখ ১৪ হাজার ৭৬৯ জন। সারাদেশে এবারের এসএসসিতে পাসের হার ৭৭.৭৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ১০ হাজার ৬২৯ শিক্ষার্থী।

নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফল প্রকাশ হওয়াটা শুভ লক্ষণ। এটি ভালো দিক। এই শিক্ষার্থীরা কলেজে ভর্তি হয়ে শিক্ষা গ্রহণ করবে- এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সবাই ভর্তি হতে পারবে তো? সবার লক্ষ্য থাকে ভালো কলেজে ভর্তি হওয়ার, সে ক্ষেত্রে অনেকের আশা পূরণের সম্ভাবনা কম। কারণ নামী কলেজগুলোয় আসন সীমিত। আবার অনেকের এসব কলেজে ভর্তি হওয়ার মতো সামর্থ নেই।

আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আশাবাদী হওয়ার পথগুলো ক্রমেই রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। অনেক আগেই পরীক্ষাপদ্ধতি লাটে উঠেছে। নকল আর প্রশ্নপত্র ফাঁস এর অন্যতম কারণ। পরীক্ষাপদ্ধতিতে ধস এটাই নেমেছে যে, প্রথম শ্রেণীর প্রশ্নপত্র ফাঁস এর ন্যক্কারজনক ঘটনা। অনৈতিকতার শিক্ষা শিশুদের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়ার এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর হতে পারে না।

প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে শুরুতে দায়িত্বশীলদের ভূমিকা ব্যাপারটিকে গতি এনে দেয় বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য এর জন্য বেশি দায়ী বলে মনে করেন পণ্ডিতজনরা। ফলে এ নিয়ে সচেতন জনগোষ্ঠী যারপরনাই ক্ষুব্ধ। নানামুখী সমালোচনার মুখে দায়িত্বশীলদের টনক নড়ে। কিন্তু ঘটনা যে লাউ সে কদু। সর্বশেষ এইচএসসি পরীক্ষা এর বড় প্রমাণ।

শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। সে শিক্ষায় গলদ থাকা মানে, গোড়ায় গলদ। যার ফলস্বরূপ মেরুদণ্ডহীন জাতি গঠনে ভূমিকা রাখা। অর্থাৎ জেনে-বুঝে জাতিকে বিপদের দিকে ঠেলে দেওয়া। যা একটি আদর্শবাদী সমাজ গড়ার অন্তরায়। এটা চলতে দেয়া যায় না। শিক্ষা ব্যবস্থার এই দুষ্টক্ষত যত দ্রুত নিরাময় করা যাবে, ততই মঙ্গল। উন্নত ও সুশিক্ষায় শিক্ষিত জাতি গঠনে যার বিকল্প নেই।

মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকরা। তাদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা দরকার। ঘরের বাইরে নীতি ও আদর্শ শিক্ষা যারা হাতে-কলমে দেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সঠিকভাবে শিক্ষা দেয়া হলে নকল আর প্রশ্নপত্র ফাঁসের দরকার পড়ে না। প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে পাঠদান শতভাগ নিশ্চিতে শিক্ষকদের দায়িত্ব নিতে হবে। শিক্ষকরা আন্তরিক হলে শিক্ষাব্যবস্থায় সহজেই আশার আলো ফুটবে। লেখক : বার্তা সম্পাদক, পিএনএস

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন