শিক্ষকদের স্কুলে আসার নির্দেশনা জারি করিনি: সচিব

  01-10-2020 07:48PM

পিএনএস ডেস্ক : করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের মধ্যে শিক্ষকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আসার নির্দেশনা জারি করা হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন।

শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে সরকার। বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) নতুন করে ছুটি বাড়ানো হয়েছে, যা চলবে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে অনেক স্কুল-কলেজে শিক্ষকদের উপস্থিত হওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে, যা নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে স্কুলে আসায় শিক্ষকদেরও স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি থেকে যায়। আমরা এ ধরনের কোনো নির্দেশনা জারি করিনি।

তিনি বলেন, আমরা নির্দেশনা জারি করেছি স্কুল রি-ওপেনিং প্ল্যান। যখন স্কুল পুনরায় খোলা হবে তখন কোন কোন বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে স্কুল খুলবে সেটার একটা গাইডলাইন তৈরি করেছি। ডব্লিউএইচও, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ইউনিসেফ, ইউনেস্কো যেসব গাইডলাইন তৈরি করেছে সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে এটা তৈরি করেছি। সেটা সব স্কুলে দিয়েছি। আমাদের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সেই রি-ওপেনিং প্ল্যান বিবেচনা করে একটা স্কুল রি-ওপেনিং প্ল্যান তৈরি করবে। সেজন্য বলেছি স্কুল খোলার ১৫ দিন আগে কাজগুলো করতে হবে। এর বাইরে স্কুলে আসতে হবে, এমন কোনো সিদ্ধান্ত আমরা দেইনি।

সচিব বলেন, আমরা কিন্তু সরকারি কর্মচারী। আমাদের সব অফিস খুলে দিয়েছে। স্কুলেও কিছু কাজ থাকে, একাডেমিক কাজ থাকে। শিক্ষকরা আসতেই পারে, অফিসাররা আসতেই পারে। কোভিড পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় ষষ্ঠবারের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হলো।

প্রধানমন্ত্রীও আশঙ্কা করেছেন নভেম্বরে একটা সেকেন্ড ওয়েভ আসতে পারে- তাহলে শুধু অক্টোবর কেন বন্ধ করা হলো- প্রশ্নে সচিব বলেন, নভেম্বরের পরিস্থিতি এখন আমাদের সামনে আসেনি। সেপ্টেম্বরের আক্রান্তের হার বিবেচনায় নিয়ে মনে করছি যে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলা সমীচীন হবে না। সেই কারণে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

শিক্ষাবর্ষ বাড়ছে কিনা- প্রশ্নে সচিব বলেন, এখনও কোনো পরিকল্পনা নেই। পহেলা জানুয়ারি যে বই উৎসব করি সেই বই ছাপানোর ব্যাপারে আমাদের পুরোদমে কাজ চলছে। আমাদের কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা পরবর্তী বছরে বই বিতরণ করবো, নতুন সেশন শুরু হবে। সে কারণে আমরা মনে করছি যে সেশন বাড়ানোর পরিকল্পনা এখন পর্যন্ত নেই।

মূল্যায়ন ও বার্ষিক পরীক্ষার সম্ভাবনা কমে আসছে কিনা- প্রশ্নে সচিব বলেন, আমরা ১৬ মার্চ পর্যন্ত ৩০-৩৫ শতাংশ পাঠ পরিকল্পনা শেষ করতে পেরেছি। রেডিও, টেলিভিশন, সামাজিক মিডিয়া ব্যবহার করে পাঠদান কার্যক্রম চালাচ্ছি। আমাদের মেইন টার্গেট হলো- প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মিনিমাম একটা লার্নিং কমপিটিন্সি লাগে। এটা যাতে প্রতিটি শিশু অর্জন করতে পারে সে ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। পরীক্ষা বা মূল্যায়ন না।

মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, স্কুলের শিক্ষকই বলতে পারবে বাচ্চারা সঠিকভাবে লার্নিং কমপিটিন্সি অর্জন করতে পেরেছে কিনা, সেট নিয়ে আমরা কাজ করছি। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা একটা টুলস তৈরি করে পরবর্তী ক্লাসে তুলে দেওয়ার জন্য।

অটো পাস দেওয়া হবে কিনা- প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের ধীরে ধীরে স্পেস কমে যাচ্ছে। সেটা হতেই পারে, পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে। আমরা নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করি।

গণশিক্ষা সচিব বলেন, ১ নভেম্বর থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের একটা পাঠ পরিকল্পনা আছে। যদি স্কুল খুলতে পারি তাহলে সে অনুযায়ী চলবে। যদি স্কুল না খোলে, শেষ অপশন যদি ব্যবহার করতে না পারি তাহলে বুঝতেই পারছেন কী (অটো পাস) হবে...।

পিএনএস/এসআইআর


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন