যে সব মালের জাকাত দিতে হবে

  23-03-2024 02:38PM




পিএনএস ডেস্ক: জাকাত زكاة এটি একটি আরবি শব্দ যার অর্থ ‎‎ ‘পরিশুদ্ধকরণ, পবিত্র করা, বৃদ্ধি পাওয়া, বরকত হওয়া ইত্যাদি’। পবিত্র কোরআনুল কারিমে নামাজের পরই সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে জাকাতকে।

জাকাত ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। প্রত্যেক স্বাধীন, পূর্ণবয়স্ক ও সম্পদশালী মুসলমান পুরুষ ও নারীর প্রতি বছর নিজের সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ দরিদ্র-দুস্থদের মধ্যে বিতরণের নিয়মকে জাকাত বলা হয়।

জাকাত শব্দটি পবিত্র কোরআনে আছে ৩২ বার, নামাজের সঙ্গে কোরআন মজিদে আছে ২৬ বার; স্বতন্ত্রভাবে কোরআনে আছে ৪ বার; পবিত্রতা অর্থে ২ বার। এ ছাড়া জাকাত কখনো সদাকাত, কখনো ইনফাক শব্দ দ্বারা বোঝানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ইনফাক শব্দটি ব্যাপক, সদাকাত শব্দটি সাধারণ ও জাকাত শব্দটি বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। কখনো কখনো এর ব্যতিক্রমও হয়েছে, অর্থাৎ এ ৩ টি শব্দ একে অন্যের স্থলে ব্যবহৃত হয়েছে।

কোরআন মজিদে ১৯টি সূরায় জাকাতের আলোচনা এসেছে। যথা: (১) সূরা বাকারা (৪ বার)। (২) সূরা নিসা (২ বার)। (৩) সূরা মায়িদা (২ বার)। (৪) সূরা তওবা (৪ বার)। (৫) সূরা আরাফ। (৬) সূরা কাহাফ। (৭) সূরা মারইয়াম (৩ বার)। (৮) সূরা মুমিনুন। (৯) সূরা রুম। (১০) সূরা ফুচ্ছিলাত/হা-মীম সিজদাহ। (১১) সূরা আম্বিয়া। (১২) সূরা হজ (২ বার)। (১৩) সূরা নূর (২ বার)। (১৪) সূরা নমল, (১৫) সূরা লোকমান, (১৬) সূরা আহজাব, (১৭) সূরা মুজাদালাহ, (১৮) সূরা মুজাম্মিল ও (১৯) সূরা বাইয়িনাহ।

জাকাতের হিসাব:

শরিয়ত নির্ধারিত সীমার বেশি সম্পদ হিজরি এক বছর ধরে কারো কাছে থাকলে তাকে সম্পদশালী গণ্য করা হয় এবং তার বর্ধনশীল সম্পদের ২.৫ শতাংশ বা ১/৪০ অংশ দান করতে হয়।

জাকাত ওয়াজিব হয় বর্ধনশীল সম্পদের ওপর যা ৪ ধরনের হয়

১. সোনা

২ রুপা

৩. ব্যবসায়িক পণ্য

৪. নগদ অর্থ

কেউ যদি ১ বছর ধরে নেসাব পরিমাণ বর্ধনশীল সম্পত্তি অর্থাৎ ৭ তোলা বা ৮৭.৪৫ গ্রাম বা এর বেশি সোনা অথবা সাড়ে ৫২ তোলা বা ৬১২.৩৫ গ্রাম রুপার মালিক থাকে অথবা ৮৭.৪৫ গ্রাম বা এর বেশি সোনার মূল্যের সমপরিমাণ নগদ অর্থ তার কাছে থাকে, তাহলে ইসলামের দৃষ্টিতে সে সম্পদশালী ব্যক্তি গণ্য হবে এবং তার ওপর জাকাত ওয়াজিব হবে।

নগদ অর্থ, সোনা/ রুপা বা ব্যবসার সম্পদ যেদিন নেসাব পর্যায়ে পৌঁছাবে, সেদিন থেকেই জাকাতের বর্ষগণনা শুরু হবে। জাকাতের বর্ষ পূর্ণ হওয়ার দিনে ওই ব্যক্তির মালিকানায় যে পরিমাণ বর্ধনশীল সম্পদ অর্থাৎ নগদ অর্থ, ব্যবসায়ের সম্পদ, সোনা বা রুপা থাকবে, তার ৪০ ভাগের ১ ভাগ বা ২.৫ শতাংশ জাকাত হিসেবে দান করে দিতে হবে।

কেউ ১ বছর ধরে নেসাব পরিমাণ সম্পত্তির মালিক থাকলে নিজের মালিকানাধীন সমুদয় বর্ধনশীল সম্পদের জাকাত দিতে হবে; শুধু যে সম্পদ এক বছর ধরে তার কাছে রয়েছে ওই সম্পদের নয়। সে বছরের শেষে বা মাঝামাঝি সময়ে কিছু অর্থ বা সোনা লাভ করে থাকলে তাও জাকাতের হিসেবে যুক্ত হবে।

ঘরের আসবাবপত্রের ওপর জাকাত ওয়াজিব হয় না। স্থাবর সম্পত্তি যেমন জমি, বাড়ি ইত্যাদির ওপরও জাকাত ওয়াজিব হয় না যদি সেগুলো ব্যবসার পণ্য না হয়। একইভাবে যে গাড়ি বা বাড়িভাড়া দেওয়া হয়, ওই গাড়ি বা বাড়িরও জাকাত দিতে হয় না। যেহেতু সেগুলো অর্থ আয়ের মাধ্যম হলেও ব্যবসার পণ্য নয়।


পিএনএস/এমএইউ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন