নজরদারির অভাবে বাজার অস্থির : ক্রেতারা বিপাকে

  19-05-2018 02:33PM

পিএনএস (মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রধান) : রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বাজার অস্থির। ইচ্ছেমতো নেয়া হচ্ছে পণ্যের দাম। কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে মুদি, মাছ-গোশতসহ সবকিছুর দাম বাড়িয়ে নিচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। ক্রেতারা তাদের কাছে জিম্মি। বিক্রেতার বেঁধে দেওয়া দামে পণ্য কিনতে বাধ্য হচ্ছেন অসহায় ক্রেতারা।

আগে থেকে একশ্রেণীর অসৎ ব্যবসায়ী রমজানে বেশি ব্যবহার হয়, এমন পণ্যের মওজুদ গড়ে তোলে। বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ানোর অপচেষ্টা চালায়। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। আগাম সতর্ক করা সত্ত্বেও পরিস্থিতির ন্যূনতম পরিবর্তন ঘটেনি। সরবরাজ পর্যাপ্ত থাকলেও দাম নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে।

রমজানের প্রথম দিন বাজারে গরুর গোশতের কেজি ছিল ৫০০ টাকা। রুই মাছ আকার ভেদে ২৫০ থেকে ৩৮০ টাকা। অথচ রমজানের আগে গরুর গোশত বিক্রি হতো ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকা। রুই মাছ বিক্রি হতো ১৮০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা কেজি। বাজারে মাছের সরবরাহ প্রচুর। যদিও দাম আকাশ-ছোঁয়া।

কাঁচাবাজারে নৈরাজ্য বেশি চোখে পড়েছে। সসা ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা। ২০ টাকার নিচে পুঁদিনা পাতার কয়েকটা ডাঁটি মিলছে না। লেবুর হালি ৪০ টাকা। একমুঠো লাল শাক ২০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও যেগুলো বিক্রি হতো অর্ধেক মূল্যে। ৬০ টাকা কেজির নিচে কোনো তরকারি মিলছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুমিল্লার নিমসার, নরসিংদী, যশোর, বগুড়া, মানিকগঞ্জসহ যেসব জায়গা থেকে তরকারি ঢাকায় আসে, সেখানে সসা সর্বোচ্চ ৩০ টাকা কেজি, বেগুন ৩৫ থেকে ৪০, সিসিঙ্গা ৩০ থেকে ৩৫, জিঙ্গা ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। অথচ ঢাকায় ৬০ টাকা কেজির নিচে মিল না। পাল্লা দিয়ে বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে শাকের দাম।

অভিজ্ঞ মহলের মতে, মনিটরিংয়ের অভাবে বাজার অস্থিতিশীল করে তুলছে একশ্রেণীর মধ্যসত্তভোগী। মূলত সুষ্ঠু নজরদারির অভাবের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে সিন্ডিকেট বেপরোয়া। ওদের বিষদাঁত ভাঙতে না পারলে ক্রেতাসাধারণের জিম্মিদশা কাটবে না। দ্রব্যমূলের কষাঘাত থেকে মুক্তি মিলবে না রোজাদারদের।

মাছ, গোশত, মুরগি, খেজুর, চিনি, ছোলা, ডাল, মুড়ি, আদা, পিঁয়াজ শাকসবজি, তরকারি, বিশেষ করে বেগুন, সসা, লেবু, ধনে পাতা, পুঁদিনাপাতার বাজারে গিয়ে নিম্ন-মধ্যবিত্তদের মাথা ঘুরে যাওয়ার উপক্রম হলেও দায়িত্বশীলদের টনক নড়ছে না।। নিরুপায় হয়ে চাহিদার সিকি ভাগ বাজার করে তারা ঘরে ফিরছে।

জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধি জায়গামতো থাকলে মানুষকে এভাবে গলাকাটা পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হতো না বলে মনে করে অভিজ্ঞ মহল। বাজার সিন্ডিকেটকে ভেঙ্গে দিতে, দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে সর্বোপরি রোজাদারদের কষ্ট লাঘবে আগাগোড়া নজরদারির ব্যবস্থা করা সময়ের দাবি।

লেখক : বার্তা সম্পাদক- পিএনএস

পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন