পিএনএস ডেস্ক: বাংলাদেশে সুশীল সমাজের কথা বলার সুযোগ সীমিত হয়ে আসার বিষয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রশ্ন উঠেছে। বাংলাদেশকে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দেশটির বৈদেশিক উন্নয়ন দপ্তর (ডিএফআইডি) কী ভূমিকা রাখতে পারে, সে বিষয়ে জানতে চেয়েছেন দেশটির সরকারদলীয় একজন সাংসদ।
গত ১৬ মার্চ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের নিয়মিত অধিবেশনে এমন প্রশ্ন তোলেন ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের এমপি ফিয়োনা ব্রুস। এ সময় অধিবেশনে বৈদেশিক উন্নয়নবিষয়ক দপ্তরের কার্যক্রম নিয়ে জবাবদিহি করছিলেন বৈদেশিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী জাস্টিন গ্রিনিং।
সরাসরি প্রশ্নে ফিয়োনা ব্রুস মন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, যুক্তরাজ্য যে বৈদেশিক সাহায্য প্রদান করে, তার উল্লেখযোগ্য একটি অংশ পায় বাংলাদেশ। অথচ গত সপ্তাহেও কনজারভেটিভ দলীয় মানবাধিকার কমিশন জানতে পেরেছে যে দেশটিতে সুশীল সমাজের সুযোগ দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে এবং এ নিয়ে চরম উদ্বেগ বিরাজ করছে। তিনি জানতে চান, এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বৈদেশিক উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী কী ভূমিকা রাখতে পারেন।
জবাবে জাস্টিন গ্রিনিং বলেন, ‘আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে পারি যে বৈদেশিক উন্নয়ন দপ্তর ও আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং অন্য দাতারাও বাংলাদেশে সুশীল সমাজের সুযোগ সংকোচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ সরকারকে এসব উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।’ সুশীল সমাজ রক্ষার বিষয়টি অবিশ্বাস্য রকম গুরুত্বপূর্ণ (ইনক্রেডিবলি ইম্পর্টেন্ট) উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, যুক্তরাজ্যের অনুদানপ্রাপ্ত বেসরকারি সংগঠনগুলো সুশীল সমাজের স্বাভাবিক বিচরণ রক্ষায় সরকারের সঙ্গে দেনদরবার চালিয়ে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১০ মার্চ কনজারভেটিভ দলীয় মানবাধিকার কমিশনের ডাকে হাউস অব কমন্সের কমিটি রুমে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বাংলাদেশের পাশাপাশি মিসর ও কম্বোডিয়ার প্রতিনিধিদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে কম্বোডিয়ার কোনো প্রতিনিধি সভায় উপস্থিত ছিলেন না।
সভায় উপস্থিত ছিলেন এমন একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মানবাধিকার পরিস্থিতি মূল্যায়নে ওই সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে সরকারের প্রতিনিধি বা কোনো সংবাদমাধ্যমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। মুক্তভাবে আলোচনা এবং প্রতিনিধিদের নিরাপত্তা বিবেচনায় এমনটি করা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ভিন্নমত দমন, বিরোধী নেতা-কর্মীদের গুম, হত্যা, নির্যাতন ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার বিষয়গুলো আলোচনায় উঠে আসে। সংবাদমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা ও ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনামের ওপর জেলায় জেলায় মামলা হওয়ার বিষয়টি বেশ গুরুত্ব পায়। কনজারভেটিভ-দলীয় এমপি ফিয়োনা ব্রুসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় বেশ কয়েকজন কনজারভেটিভ-দলীয় এমপি উপস্থিত ছিলেন।
পিএনএস/আনোয়ার
বাংলাদেশে সুশীল সমাজের সুযোগ সংকোচন কেন, জানতে চায় ব্রিটিশ পার্লামেন্ট
19-03-2016 08:10AM