সবার নজর বিএনপির কাউন্সিলের দিকে

  19-03-2016 12:20AM

পিএনএস: নানা চড়াই উৎরাই পার হয়ে বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। এমন এক সময় দলটির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যখন বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শত শত মামলার খড়গ ঝুলছে। দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে জেলে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। এসব পরিস্থিতির পরও ছয় বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কাউন্সিলে তিন হাজারের বেশি ডেলিগেট অংশ নিচ্ছেন। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে কাউন্সিলর, ডেলিগেট, আমন্ত্রিত অতিথিসহ এবারের সম্মেলনে লক্ষাধিক নেতা-কর্মী ও সমর্থক অংশ নেবেন। থাকছেন ৩ হাজার ১০০ জন কাউন্সিলর, ৮ থেকে ৯ হাজার ডেলিগেটের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি প্রায় ৮০০ আমন্ত্রিত অতিথি । এর আগে ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর বিএনপির পঞ্চম জাতীয় সম্মেলন হয়েছিল।

এবারের সম্মেলনের স্লোগান ঠিক করা হয়েছে ‘দুর্নীতি-দুঃশাসন হবেই শেষ, গণতন্ত্রের বাংলাদেশ’। দলের ১১টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন মুক্তিযোদ্ধা দল, মহিলা দল, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল, কৃষক দল, ওলামা দল, তাঁতী দল, মৎস্যজীবী দল, জাসাসও আলাদা আলাদা স্লোগানে পোস্টার প্রকাশ করেছে।

জানা গেছে, সকাল ১০টায় শুরু হয়ে কউন্সিলের উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষ হবে মধ্যাহ্নভোজের মধ্য দিয়ে। এরপর দুপুর ৩টা থেকে শুরু হবে রুদ্ধদ্বার অধিবেশন। এতে আলোচ্য সূচিতে রয়েছে- শোক প্রস্তাব উপস্থাপন, দলের চেয়ারম্যান ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনে গঠিত নির্বাচন পরিচালনা কমিটির রিপোর্ট পেশ, মহাসচিবের সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা, দলের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র সংশোধন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার বক্তব্য ছাড়াও লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য দেবেন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বিএনপি নেতারা বলেছেন, এবারের কাউন্সিল ইতিহাসে স্থান করে নেবে। পাশাপাশি তারা এটাও মনে করেন যে এই কাউন্সিলের মাধ্যমে বিএনপি ঘুরে দাঁড়াবে এবং নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে আন্দোলনের শক্তি সঞ্চার করবে। কাউন্সিলের প্রস্তুতি দেখতে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে বিএনপি আবার জেগে উঠবে।

গতকাল বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেছেন, বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল একটি যুগান্তকারী রাজনৈতিক ঘটনা হিসেবে ইতিহাসে স্থান পাবে। এই কাউন্সিলের পর বিএনপি আরও এক ধাপ শক্তিশালী সংগঠন হয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, কাউন্সিলকে ঘিরে ইতিমধ্যে সারা দেশের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই কাউন্সিল দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটবে বলেও মনে করেন রিজভী।

এদিকে বিএনপির কাউন্সিলের জন্য জায়গার অনুমতি না দেওয়া এবং ব্যাপক ধরপাকড় করা হলেও শেষ পর্যন্ত কয়েক দফায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন ঢাকা মহানগর নাট্য মঞ্চ এবং শেষ পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের অনুমতি দেয় কর্তৃপক্ষ।

গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিএনপির কাউন্সিলে কেউ যাবেন না বলেই সিদ্ধান্ত রয়েছে। সরকারি দলের পক্ষ থেকে বিএনপিকে নানা অপবাদ দেওয়া হলেও তারা মূলত কাউন্সিলের দিকেই তীক্ষ নজর রাখছেন।

জানা গেছে, বিএনপির কাউন্সিলে যোগ দিতে ইতোমধ্যে বৃটিশ লেবার পার্টির সদস্য সিমন ডান্স জ্যাক ঢাকায় এসেছেন। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য ফিল বেনিওনের পৌঁছনোর কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডেমোক্রেট পার্টির প্রতিনিধিও কাউন্সিলের দিন সকালেই ঢাকায় পৌঁছবেন বলে আশা করছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান খান রিপন।
তিনি জানান, ভারত, চীন, মিয়ানমার, নেপালসহ বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাউন্সিলে আমন্ত্রণ পৌঁছানো হয়েছে। তবে সময়ের স্বল্পতার কারণে তারা অনেকে আসতে পারছেন না।

এছাড়া দেশী-বিদেশী শত শত মিডিয়া বিএনপির কাউন্সিলের সংবাদ প্রচার করবে বলে জানিয়েছেন কাউন্সিল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।



পিএনএস/বাকীবিল্লাহ্

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন