শেরপুরে জেঁকে বসেছে শীত, কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে জনপদ

  10-11-2018 06:57PM

পিএনএস, শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় জেঁকে বসেছে শীত। গত তিন-চার দিন ধরে হঠাৎ শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে জনজীবনে। ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাবও বেড়েছে। শীত মোকাবেলায় প্রস্তুতি না থাকায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। আর এই সুযোগ নিয়ে গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরাও পোশাকের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, গত তিন-চার দিন ধরে এ উপজেলায় দিনের বেলায় সূর্য দেখা গেলেও অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শীত বাড়তে থাকে। একইসঙ্গে বইতে থাকে ঠাণ্ডা বাতাস। এছাড়া সন্ধ্যার পর থেকে সকাল পর্যন্ত চারদিকে কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে এই জনপদ। গভীর রাতে হালকা বৃষ্টির ন্যায় গাছের পাতা বেয়ে ঝিরঝির করে ঝড়ছে কুয়াশা। রিকসা চালক শাজাহান আলী জানান, তিন-চার দিন ধরে হঠাৎ করে শীত পড়েছে। রাতের বেলায় সুয়েটার গায়ে দিয়ে রিকসা চালাতে হচ্ছে। তাছাড়া প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে সর্দি লেগে হালকা জ্বর জ্বর অনুভব করছি।

এদিকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। গেল তিন-চার দিন ধরে ঠাণ্ডা, সর্দি, জ্বর, ডায়রিয়া, আমাশয়, কাশিসহ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগিরা চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে আসছেন। জানা যায়, উপজেলার নদীর উপকূলবর্তী সুঘাট, খানপুর, খামারকান্দি, গাড়িদহ ও মির্জাপুর ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে ব্যাপকহারে শীতজনিত রোগ দেখা দিয়েছে। শহরের বিভিন্ন ওষুধের দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিনই অসংখ্য রোগি শীতজনিত বিভিন্ন রোগের জন্য ওষুধ কিনতে দোকানে দোকানে ছুটছেন। এদিকে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়লেও এতে ভয়ের কোন কারণ নেই বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক জানান, শীতকাল এলেই সাধারণত এমন রোগ হয়ে থাকে। এবারও সেই শীতজনিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে প্রতিদিন শতাধিক শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধরাই বেশি বলে এই চিকিৎসক জানান। উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল কাদের জানান, কয়েকদিন ধরে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শীতের কারণে মানুষের নিউমোনিয়া, ঠাণ্ডা, সর্দ্দি, জ্বর, কাশি, আমাশয় ও ডায়রিয়া রোগ হচ্ছে। এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি রোগী চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে আসছেন। সাধ্যানুযায়ি তাদের চিকিৎসা সেবাও দেয়া হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।

অন্যদিকে শীতকে পুঁজি করে গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা ইতিমধ্যে পোশাকের দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, গেল এক সপ্তাহ আগে একটি সিংগেল লেপ ৪৫০টাকায় বিক্রি হয়েছে, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০টাকায়। একইভাবে ডাবল লেপ ৬০০ টাকার স্থলে ৮৫০-৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অনুরুপভাবে অন্যান্য গরম পোশাক বিক্রির ক্ষেত্রেও একই অবস্থা চলছে। ফলে গরীব শীতার্থ মানুষরগগুলো বিপাকে পড়েছেন।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন