কমলগঞ্জের দলই চা বাগান বন্ধ ঘোষণা

  28-07-2020 07:49PM

পিএনএস ডেস্ক : মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের সীমান্ত চা বাগান দলই রাতের আধারে নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে অনিদিষ্টকালের জন্য চা বাগান বন্ধ ঘোষণা করেছে দলই টি কোং লিমিটেড। গতকাল রাত ১০টায় দলই টি কোম্পানীর প্রধান কার্যালয়ের এমএম ইসলাম উপব্যবস্থাপক স্বাক্ষরিত নোটিশে এ আদেশ জারি করা হয়। চা বাগান বন্ধ ঘোষণার খবরে শ্রমিকরা মঙ্গলবার সকাল ৯টায় ফ্যাক্টরির সামনে অবস্থান নিয়ে বাগান বন্ধের প্রতিবাদ জানায়। চা বাগানের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান চা বাগান ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় কোম্পানী বাগানটি বন্ধ ঘোষণা করেছে। শ্রম আইন না মেনে বাগান বন্ধের প্রতিবাদ জানিয়ে চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে আবেদন করেছেন।

জানা যায়, সিলেটের বিশিষ্ট দানবীর রাগীব আলীর মালিকানাধীন দলই চা বাগানের ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে বাগানের কর্মরত চা শ্রমিকরা নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে তার অপসারণের দাবী জানিয়ে আন্দোলন করেছিলেন গত ২৯ জুন। পরে প্রশাসন, চা বাগান কৃর্তপক্ষ ও চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বৈঠক করে দলই চা বাগান থেকে ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসনলামকে কেন্দ্রীয় দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক জাকারিয়া হাবিবকে ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক হিসাবে দায়িত্ব প্রদান করার এক মাস পর ২৭ জুলাই রাতে হঠাৎ করে চা বাগানে কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নিরাপত্তার অভাবে দেখিয়ে দলই চা বাগান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কৃর্তপক্ষ। এতে করে মঙ্গলবার সকাল থেকে বাগানে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। শ্রমিকরা কাজে যোগদানে এসে শুনতে পান বাগান বন্ধ। হাজারো শ্রমিকরা বাগান ফ্যাক্টরির সামনে অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত রাখেন।

সরেজমিন ধলই চা বাগানে গেলে চা বাগান চা শ্রমিকরা বলেন, সোমবার সকাল থেকে ব্যবস্থাপক ও বাগান কর্মচারীরা তাদেরকে দিয়ে ৩ গুন চা পাতা উত্তোলণ করান। কারখানার বাবু গোলাম হোসেন তাদেরকে বলেছিলেন, মঙ্গলবার বিদ্যুৎ থাকবে না তাই যেন তারা অতিরিক্ত কাজ করেন। সে হিসেবে তারা এক দিনে ৩ গুন কাজ করেছেন। সোমবার সন্ধ্যায় ধলই চা বাগান কোম্পানীর উপ মহাব্যবস্থাপক এম এম ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ টাঙিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য চা বাগান বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী বলেন, বাংলাদেশ শ্রম আইন না মেনে অহেতুভাবে বিনা কারণে একটি বাগান বন্ধ করা হয়েছে। এটা মেনে নেয়া যায় না। দ্রুত বাগান খুলে দেযার জন্য দাবী জানান।

দলই চা বাগানের অভিযুক্ত প্রধান ব্যবস্থাপক মো. আমিনুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, দীর্ঘ দিন ধরে অযতা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ একটি পক্ষ বাগানে শ্রমিকদের দিয়ে নানা অসন্তোষ সৃষ্টি করে আসছে। এ কারণে বাগানটি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।

কমলগঞ্জ থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান বলেন, ধলই চা বাগানে যাতে পরিস্থিতি ভালো থাকে সে জন্য সেখানে মঙ্গলবার সকাল থেকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, বাগান কৃর্তপক্ষ আমাকে একটি নোটিশের কপি দিয়েছে। মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি জেনে শ্রমকি নেতৃবৃন্দ ও বাগান কৃর্তপক্ষের সাথে যোগযোগ হয়েছে। চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ একটি আবেদন পাওয়ার কথা স্বীকার করে বুধবার বিষয়টি সমাধনের জন্য একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন