পিএনএস ডেস্ক : গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত দল আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে প্রধান ফটকে (ডেইরি গেট ) এসে শেষ হয়।
মিছিল শেষে ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বক্তারা। এসময় বক্তারা অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানান এবং আওয়ামী লীগের বিষয়ে বর্তমান সরকারের ‘নীরবতার’ সমালোচনা করেন।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জাকিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সহপাঠীদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে। সেই রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা পেয়েছি এবং স্বৈরাচার দূর করতে সফল হয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের কোনো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখছি না। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কোনো ব্যবস্থা দেখছি না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আওয়াজ তুলতে চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগের দোসরদের বিচার ও সকল ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।’
জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেন, ‘আমরা দেখতে পাই, এখনো যদি ইউরোপ মহাদেশে নাৎসি বাহিনীর নাম মুখে নেওয়া হয়, নাৎসি বাহিনীকে সাপোর্ট করেন, তাহলে আপনাকে সমাজ থেকে বিতাড়িত করা হয়। অথচ আজ পর্যন্ত আমরা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখি নাই। এছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে, যারা নাৎসি বাহিনীর দোসর ছিল, জনসম্মুখে তাদের চুল কেটে দেয়া হয়েছিল। অথচ আমরা যখন ৩২ নাম্বারের বাড়ি ভাঙতে যাই, তখন আমাদের বিশিষ্ট নাগরিকরা এর বিপক্ষে বিবৃতি দেয়। আমরা চাই, শেখ হাসিনাকে অতিদ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে এবং ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে চিরতরে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।’
জাবি শাখা শিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘২০১৪ সালের পর থেকে আমাদের ভোট দেওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। রাতের আধারে ভোট কেটে সকালে ভোটের মুলা ঝোলানো হয়েছে। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পরে আমরা একটা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি একদল মানুষ উঠে পড়ে লেগেছে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য। আমরা বলে দিতে চাই কোন প্রকার তালবাহানা আমরা মেনে নেব না। অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘গণহত্যার পরে যে অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে তাদের প্রধান দায়িত্ব হওয়া উচিত ছিল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা কিন্তু তারা তা করেনি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই সুযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগ হরতালের কর্মসূচি দেয়, লিফলেট বিতরণ করে, গুপ্ত হামলা চালায়। আমরা এই সরকারকে বলে দিতে চাই গণহত্যার দায়ে এই দেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। আওয়ামী লীগ সচিবালয়, পুলিশ, প্রশাসনে, বিচার বিভাগ ও সেনাবাহিনীতে আছে।'
তিনি আরও বলেন, 'বিপ্লবীরা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্লিপ্ততার সুযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগ যে অপরাধ করতে চায় আমরা তার প্রশ্রয় দিতে চাই না। দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিতে হবে। এই বাংলার ছাত্র-জনতা তাদেরকে প্রতিহত করবে।অন্তবর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই আপনারা যদি শহিদদের রক্তের সাথে বেইমানি না করতে চান এবং গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণ করেন তাহলে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেন।’
পিএনএস/এএ
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে জাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
13-02-2025 03:06AM
![](/static/image/upload/news/2025/02/12/91f4b8ce7e582dbfb9ba49cf4df296c0_2.jpg?w=550&h=350)