পিএনএস ডেস্ক: সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতার মসনদে বসার পর তার সঙ্গে প্রথমবারের মতো সাক্ষাৎ করেন মোদি।
এই বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন মোদি ও ট্রাম্প। তবে সেখানে তিনি ভারতীয় শিল্পপতি ব্যবসায়ী গৌতম আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কৌশললে এড়িয়ে যান।
হাজারটা অভিযোগ উঠলেও গৌতম আদানির সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে কোনও দিনই মুখ খোলেননি মোদি। যুক্তরাষ্ট্রেও একই পন্থা অবলম্বন করলেন তিনি।
গত ১১ বছরে দেশের মাটিতে একবারও সংবাদ সম্মেলন করেননি মোদি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সফরে সে দেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর প্রথাগতভাবে প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়াটা এড়াতে পারেননি।
এ সময় আদানি–সংক্রান্ত প্রশ্ন করা হলে কৌশলে উত্তরটি এড়িয়ে যান মোদি। তিনি বলেন, দুই রাষ্ট্রপ্রধান যখন বৈঠক করেন, তখন এই ধরনের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আলোচনার অবকাশ থাকে না।
যুক্তরাষ্ট্রে‘ব্যক্তিগত বিষয়’ বলে আদানি প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলেও ভারতজুড়ে তা নিয়ে বয়ে যাচ্ছে সমালোচনার ঝড়।
সংসদে আদানি–মোদি প্রসঙ্গ একাধিকবার তুলেছেন বিরোধী নেতারা। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সরাসরি জানতে চেয়েছিলেন, কেন আদানির বিমান প্রধানমন্ত্রী ব্যবহার করেন? কেন মোদির বিদেশ সফরে সব সময় আদানি সঙ্গী হন? কেন শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, ইসরায়েল সফরের পরই সেসব দেশে আদানির সংস্থা বিপুল বরাদ্দ পায়? বরাদ্দ পাওয়া নিয়ে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ বিদেশে কেন ওঠে?
বস্তুত, রাহুল যেসব প্রশ্ন তুললেন, সেসব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের কোনও জবাবই সংসদের ভেতরে বা বাইরে মোদি আজ পর্যন্ত দেননি। এমনকি এও দেখা গেছে, সংসদীয় বিতর্ক থেকে আদানির উল্লেখ পর্যন্ত স্পিকারের নির্দেশে মুছে দেওয়া হয়েছে। উপায়ান্তর না দেখে বিরোধীরা শেষ দিকে আদানির নামের আদ্যক্ষর উচ্চারণ করে বুঝিয়ে দিতেন, কাকে তারা বোঝাতে চাইছেন।
লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, “আমেরিকায় গিয়ে আদানির দুর্নীতি ধামাচাপা দিয়েছেন মোদি। বন্ধুদের পকেট ভরানোর নীতিই যেখানে রাষ্ট্রনির্মাণ, সেখানে ঘুষের কারবার ও দেশের সম্পত্তি লুট ব্যক্তিগত বিষয়ই তো হবে!”
আম আদমি পার্টি বলেছে, শুধু বন্ধুত্বের প্রমাণই নয়, মোদি স্বীকার করে নিলেন আদানি তার ব্যক্তিগত বিষয়।
তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য সাকেত গোখলে বলেছেন, আমেরিকায় সংবাদ সম্মেলনে এমন হাল বলেই মোদি দেশে সংবাদ সম্মোলন করেন না।
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, “আদানির নাম শুনেই মোদির মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গিয়েছিল। অপ্রাসঙ্গিক কথাবার্তা বলে বিষয়টি ব্যক্তিগত বলে এড়াতে চেয়েছেন। দুর্নীতি কবে থেকে ব্যক্তিগত বিষয় হলো জানতে ইচ্ছা করে।”
বিরোধীদের কটাক্ষ, “আদানি সম্পর্কিত প্রশ্ন দেশে করলে মোদি মুখে কুলুপ আঁটেন, বিদেশে করলে তা তার ব্যক্তিগত বিষয় হয়ে যায়!” সূত্র: দ্য হিন্দু, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
এসএস
যুক্তরাষ্ট্রে আদানি নিয়ে প্রশ্ন, এড়িয়ে গেলেন মোদি
15-02-2025 04:15PM
![](/static/image/upload/news/2025/02/15/f644b5e3037bc02d94b633ff02a614d7_2.jpg?w=550&h=350)