পিএনএস ডেস্ক: চট্টগ্রাম ওয়াসায় অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান ও পরে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম ফজলুল্লাহ’র অনিয়ম-দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই সঙ্গে ৩ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন ওয়াসার একটি স্যুয়ারেজ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগের সত্যতাও খতিয়ে দেখছে দুদক।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে অনুসন্ধানের প্রাথমিক পর্যায়ে চট্টগ্রাম ওয়াসা কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুদকের চার সদস্যের একটি টিম। এতে নেতৃত্ব দেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম–১ এর সহকারী পরিচালক সাঈদ মোহাম্মদ ইমরান।
অভিযান শেষে দুদকের এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এ কে এম ফজলুল্লাহ’র আমলে চট্টগ্রাম ওয়াসায় কিছু অনিয়মের প্রমাণ তারা পেয়েছেন। এর মধ্যে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগ আছে। এ ছাড়া ফজলুল্লাহ’র দায়িত্ব পালনের সময় রহস্যজনক আগুনে ওয়াসার বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পোড়ানো বা গায়েব করার অভিযোগও আছে।
দুদক কর্মকর্তা সাঈদ মোহাম্মদ ইমরান সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাবেক এমডি দীর্ঘ ১৫ বছর এখানে দায়িত্বে ছিলেন। তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ আমাদের কাছে আছে। বিশেষ করে ২০২০ সালে ওয়াসা ভবনের তৃতীয় তলায় একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি সাজানো ছিল- এমন অভিযোগ এসেছে, যেখানে অনেকগুলো নথি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গায়েব করা হয়েছে বলা হয়েছে। আমরা জানতে চেয়েছি এ বিষয়ে। ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আমাদেরকে দেওয়া হয়েছে। এটি আমরা বিস্তারিত স্টাডি করে বলতে পারব।’
ফজলুল্লাহ’র বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগের অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ওনার (একেএম ফজলুল্লাহ) শেষ ৬ মাসে যে নিয়োগ বা বদলিগুলো হয়েছে- এ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র চেয়েছি। সচিব মহোদয় এগুলো দেওয়ার কথা বলেছেন। সেই রেকর্ডপত্র পেলে আমরা যাচাই-বাছাই করে নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো অনিয়ম হয়েছে কি-না জানতে পারব।’
‘তবে এখানকার ইঞ্জিনিয়ার মাকসুদ সাহেবের কাছেই একটা তথ্য পেয়েছি। সেটা হচ্ছে, একটা স্যুয়ারেজ প্রকল্প ছিল। সেই প্রকল্পে সাবেক এমডি সাহেবের ভাগিনা সরোয়ার জাহানের স্ত্রী পরিচালক ছিলেন। এই প্রজেক্টের যিনি পরিচালক এবং নির্বাহী প্রকৌশলী আছেন, অভিযোগ ছিল জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে যারা জুনিয়র ছিল তাদেরকে পদোন্নতি দিয়ে ভাগনে বউকে প্রজেক্টের পরিচালক করা হয়েছে। আমরা সচিব মহোদয়ের কাছে জেষ্ঠ্যতার তালিকা চেয়েছি। এটা বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে আমরা বলতে পারব জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে কি-না।’
অভিযানে-অনিয়মের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেয়েছেন কি না- জানতে চাইলে সাঈদ মোহাম্মদ ইমরান বলেন, ‘কিছুটা তো অনিয়ম অবশ্যই আছে। এই যেমন আমরা নিয়োগ সংক্রান্ত একটি তথ্য পেলাম ওনাদের একজন কর্মকর্তার কাছে। আরও কয়েকজন স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে। এটা আসলে রেকর্ডপত্র যাচাই করে বলতে পারব। অনিয়ম হলে আমরা যথাযথ নিয়মে ব্যবস্থা নেব।’
সাঈদ মোহাম্মদ ইমরান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের কাছে অভিযোগ ছিল, হালিশহরে ৩ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান স্যুয়ারেজ প্রকল্পের ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে। সেখানে নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারে অনিয়ম অর্থাৎ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে- এ ধরনের অভিযোগ ছিল।’
এসএস
সাবেক এমডির অনিয়ম খুঁজতে চট্টগ্রাম ওয়াসায় দুদক
20-02-2025 07:18PM
