নিজস্ব প্রতিবেদক: সাজেকের অগ্নিকাণ্ডে রিসোর্ট মালিকদের পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্থানীয় লুসাই ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী। আগুনে পুড়েছে তাদের ৩৫ বসত বাড়ি। ঘুরে দাঁড়াতে সহযোগিতা চান এসব নিঃস্ব মানুষ। ফায়ার সার্ভিস বলছে অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা না থাকায় আগুনে ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে।
সাজেকের অগ্নিকাণ্ডের পর রুইলুই পাড়ার স্টোন গার্ডেনে রাত কাটিয়েছে স্থানীয় লুসাই ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর মানুষ। আগুনে লুসাই জনগোষ্ঠীর ১৬টি ও স্থানীয় ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ১৯টি বসতঘর পুড়ে গেছে। ঘরের সামান্য কিছু আসাবপত্র ও লেপ-তোষক রক্ষা করতে পারলেও আগুনে ঘর-বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সাজেকের সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট ও দোকানের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্থানীয়রা। আগুনে পুড়ে সহায় সম্বল হারানো মানুষ ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তায়।
স্থানীয় বাসিন্দা জেরি লুসাই বলেন, এই আগুন আমাদের সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে। ঘরের মধ্যে ফ্যান, ফ্রিজসহ অনেক ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র ছিল। কিন্তু কয়েকটি লেপ-তোষক ছাড়া আর কিছুই বের করতে পারিনি। খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছি আমরা।
আরেক বাসিন্দা সুকমল ত্রিপুরা বলেন, আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে গিয়েছে। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই যাতে আমাদের অন্তত ঘরটা নির্মাণ করে দেওয়া হোক।
বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পরায় কিছুই রক্ষা করতে পারেনি অনেকে। সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে আগুনে পুড়ে যাওয়া স্থানীয় মানুষের জন্য সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহায়তা চেয়েছেন সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য অনিত্য ত্রিপুরা।
তিনি বলেন, মোট ৩৪টি রিসোর্ট পুড়ে গেছে। যার মধ্যে ২টি নির্মাণাধীন রিসোর্টও ছিল। আমার রেস্টুরেন্টও পুড়ে গেছে। সরকারসহ বিত্তবানদের কাছে আমার চাওয়া থাকবে, আপনারা সকলে এগিয়ে আসুন। আমরা যাতে সাজেককে আবারো আগের মতো সুন্দর ও পর্যটকমুখী সাজেকে রুপান্তর করতে পারি।
সাজেক ফায়ারের দায়িত্বে থাকা বান্দরবান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালম পূর্ণচন্দ্র মুৎসুদ্দী বলেন, এখানের রির্সোটগুলো কাঠের তৈরি হওয়ায় বাতাসে তীব্রতায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পরেছে। এছাড়া রির্সোটগুলোতে অগ্নিনির্বাপনের সরঞ্জাম না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।
অগ্নিদূর্গতদের সহায়তা ও ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের বিষয়ে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বলেন, আমরা অগ্নিকাণ্ডের মূল কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। সবাই এই ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে। অগ্নিদূর্গতদের আর্থিক সহায়তা করা হবে।
তিনি আরো বলেন, ভবিষ্যতে যাতে এতবড় দুর্ঘটনা না ঘটে সেজন্য একটি ফায়ার স্টেশন নির্মাণ করা যায় কিনা সেই ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে আমরা সরকারের কাছে সুপারিশ করবো।
এসএস
সাজেকে আগুন, নিঃস্ব ত্রিপুরা ও লুসাই জনগোষ্ঠী
25-02-2025 07:38PM
