মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ইউরোপের জন্যও চ্যালেঞ্জ

  15-10-2018 01:46AM



পিএনএস ডেস্ক: মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নীতিকে কেন্দ্র করে ইউরোপ ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বাদানুবাদ অব্যাহত রয়েছে।

ফ্রান্সের সিনেট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমেরিকার পক্ষ থেকে একতরফা বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে।

পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকার বেরিয়ে যাওয়া এবং ইরানের ওপর ফের মার্কিন নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেয়ার ঘটনাগুলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্যও মর্যাদাহানিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই কারণে ইউরোপ পরমাণু সমঝোতা টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি ইরানের সঙ্গেও সম্পর্ক অব্যাহত রাখার জন্য আর্থ-রাজনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করছে।

ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা ইউরোপের সামনে দু'টি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ইউরোপীয় কর্মকর্তাদেরকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। কারণ এ ধরণের নিষেধাজ্ঞা একদিকে ইউরোপের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক স্বার্থের জন্য হুমকি এবং অন্য দেশের সঙ্গে স্বাধীনভাবে বাণিজ্য চুক্তি করার পথেও বড় বাধা।

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের পথে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে ইউরোপ মনে করছে।

এই ব্যাপারে ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জন ক্লাউডি ইয়ানকার বলেছেন, "ইউরোপের নিজেদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বাধীন নীতি গ্রহণের সময় এসেছে। কারণ বিশ্বটা সবার এবং এখানে একক কর্তৃত্ব বা মোড়লিপনার কোনো সুযোগ নেই।"

এই কারণে ইউরোপীয় কর্মকর্তারা পরমাণু সমঝোতা টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইরানের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করছে।

ইউরোপীয় কমিশনের মুখপাত্র মিনা অ্যান্ড্রিভা বিভিন্ন দেশের ওপর মার্কিন একতরফা নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেছে বলেছেন, ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করার ব্যাপারে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো সম্পূর্ণ স্বাধীন।

এদিকে, ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞায় শামিল হতে আমেরিকা অন্যান্য দেশের ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করে চলেছে যা কিনা আন্তর্জাতিক রীতি-নীতির বিরোধী। আমেরিকার এ আচরণে ইউরোপীয় কর্মকর্তারা প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, ইরান ইস্যুতে মার্কিন আচরণ ও চাপ প্রয়োগ ইউরোপের স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান ডোনাল্ড টাস্ক এ ব্যাপারে বলেছেন, "আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কিংবা কোনো দেশের ওপর রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়ার অধিকার আমেরিকার নেই।"

যাইহোক, ব্যাপক সমালোচনা ও বিরোধিতা সত্বেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মিত্রদের কাছে ওয়াশিংটনের শ্রেষ্ঠত্ব ও ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে একতরফা নীতি গ্রহণ অব্যাহত রেখেছেন। কিন্তু এতে করে কেবল ওয়াশিংটনই একঘরে হয়ে পড়ছে এবং একে একে মিত্র হারাচ্ছে আমেরিকা।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন