‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে সরকারের বিচার হবে’

  20-02-2019 09:34PM

পিএনএস ডেস্ক : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। দীর্ঘ এক বছর ধরে তিনি কারাগারে রয়েছেন, তার সুচিকিৎসা হচ্ছে না। তাকে একটা নির্জন কারাগারে রেখে সরকার মানবাধিকার লংঘন করেছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, মানবাধিকার লঙ্ঘন করার জন্য তাদের বিচার হবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কখনো মনের জোর ও মনোবল হারিয়ে ফেলবেন না। দুর্বল ও হতাশ হবেন না। স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই রুখে দাঁড়াতে হবে। অন্ধকার থেকে সূর্যের সেই প্রভাত- সূর্যোদয় হবেই। সেই সূর্যোদয়ের দিকে আপনাদের এগিয়ে যেতে হবে।

বুধবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে ‘মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় সিনিয়র নেতাদের বক্তব্য চলাকালে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কর্মসূচি নিয়ে দর্শক সারিতে থাকা নেতাকর্মীদের ক্ষোভ প্রকাশ ও হইচইয়ের ঘটনা ঘটে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেনি, এরা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে তারা প্রমাণ করেছে, আওয়ামী লীগ কোনো গণতান্ত্রিক শক্তি নয়।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এ কথা কেন ভাবছেন যে আপনারা পরাজিত হয়েছেন? আমরা লড়াই করব, সেই লড়াইয়ে অবশ্যই আমরা বিজয়ী হব। বাংলাদেশের মানুষ বিজয়ী হবেই হবে।

আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে ফখরুল ইসলাম বলেন, এই সংগ্রামে আমাদের অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। তাই আসুন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আমরা সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করি। তিনি অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসার দাবি জানান।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তিকে মোকাবিলা করার জন্য আমাদের অবশ্যই সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। আর আমরা দীর্ঘকাল ধরে লড়াই করছি। এই লড়াইকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে।

তিনি বলেন, এই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে দিয়ে সম্পূর্ণ নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে। সেটা নতুন নির্বাচন কমিশন ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে করতে হবে। আসুন এটাই হোক আমাদের আগামী দিনের সংগ্রাম ও লড়াই। সে জন্য সবাইকে প্রস্তুতি নিতে হবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বর দেশে কোনো নির্বাচন হয়নি। তারা ভোট চুরি করে রাষ্ট্র পরিচালনায় দায়িত্ব পালন করছেন। আজকে আমাদের করণীয় কী? জয়প্রিয়তাই যথেষ্ট নয়। আমাদের বিশাল জনপ্রিয়তা, কিন্তু এটা যথেষ্ট নয়। কারণ প্রমাণ হয়েছে, সংগঠন ছাড়া জনপ্রিয়তা কিছু নয়। যারা মার খেয়েছে, জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেছে, তাদের সুযোগ দিতে হবে।

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, দেশের প্রাণশক্তি হচ্ছে ছাত্ররা। আর বিএনপির প্রাণশক্তি হচ্ছে ছাত্রদল। তাই বলব, আপনারা ছাত্ররা এগিয়ে আসুন। আমরা রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করব।

স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, এক বছর হলো। কিন্তু আমরা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারি নাই। আমাদের অনেক সমর্থন ও অনেক নেতা আছে। এরপরও খালেদা জিয়া মুক্ত হচ্ছে না। যাতে হয়, এমন একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে সবাই মিলে এক সঙ্গে নামলে বিএনপি চেয়ারপারসনকে মুক্ত করা অবশ্যই সম্ভব।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন