আজ থেকে ৪ ডিজিটের শর্টকোড বন্ধ

  31-08-2018 06:58AM



পিএনএস ডেস্ক: বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ৪ ডিজিটের শর্টকোড। এখন থেকে টেলিসেবা দিতে ৫ ডিজিটের শর্টকোড ব্যবহার করতে হবে।

তবে ৫ ডিজিটের শর্টকোড চালু করতে আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় চেয়েছে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশেন (বিএমপিআইএ)। গত ২০ আগস্ট বিটিআরসি চেয়ারম্যান বরাবর এ বিষয়ে লিখিত অনুরোধ জানান সংগঠনটির জেনারেল ম্যানেজার মনিরুল বাশার।

চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল নাম্বারিং প্ল্যান ২০১৭ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ৪ ও ৫ ডিজিটের শর্টকোড ব্যবহৃত হচ্ছে। টেলিকম অপারেটররা ৫ ডিজিটের শর্টকোড চালু করতে ইতোমধ্যেই কারগরি সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, এই ডিজিট উন্নয়ন প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে হলে আরও সময় প্রয়োজন। এ জন্য আগামী ৩১ মার্চের আগ পর্যন্ত মোবাইল ইম্পোর্টার্সদের জন্য বরাদ্দকৃত ৫৯৫৯ শর্টকোর্ডটি চালু না রাখলে একদিকে আমদানিকারকরা যেমন মোবাইল ফোন সচল হওয়া সংক্রান্ত তথ্য পাবেন না, তেমনি গ্রাহকের বিক্রয়োত্তর সেবা প্রাপ্তিতেও জটিলতা সৃষ্টি হবে।

কারিগরি সীমাবদ্ধতার কারণে শর্টকোড ৫ ডিজিটে রূপান্তর কেবল ডেটাবেজ ও পোর্ট হালনাগাদ করণের ওপরই নির্ভর করছে না জানিয়ে মনিরুল বাশার বলেন, মোবাইল ফোনের ভেতরেই ৫৯৫৯ শর্টকোর্ডটি সংরক্ষিত থাকে। তাই ইতোমধ্যেই যেসব ফোন আমদানি করা হয়েছে তার কোড পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। এগুলো বিক্রি শেষ না হওয়া পর্যন্ত ৪ ডিজিটের এই শর্টকোড চালু না রাখার কোনো বিকল্প নেই।

প্রসঙ্গত, ফোন কল সেবার সংক্ষিপ্ত হলো শর্টকোড। লম্বা সিরিয়ালের নম্বরে ফোন না করে সংক্ষিপ্ত একটি নম্বরে কল করা যায় নিমিষেই। ছোট সংখ্যার নম্বর বলে এটি মনে রাখাও সহজ। দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জরুরি বিভাগ এই সেবাগুলো দিচ্ছে। তবে এসব নম্বর ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করার সুযোগ নেই।

বিশ্বব্যাপী তিন ধরনের শর্টকোডের প্রচলন রয়েছে- গোল্ডেন শর্টকোড, ডেডিকেটেড শর্টকোড ও শেয়ারড শর্টকোড। নিয়ম মাফিক আইএসপি-টিএসপি (ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান) এবং পিএসটিএন (ফিক্সড ফোন) অপারেটররাই দেশে একমাত্র শর্টকোড পার্ক করে থাকে।

বিটিআরসি দুই ধরনের সেবার জন্য শর্টকোড দিয়ে থাকে। একটি হলো ব্যবসায়িক আর দ্বিতীয়টি হলো অব্যবসায়িক। বিটিআরসির নির্দিষ্ট ফি ও নির্ধারিত ফরমে আবেদন করে শর্টকোড বরাদ্দ নেওয়া যায়।

ক্যাটাগরি এ-ব্যবসায়িক শর্টকোডের বরাদ্দ ফি এক লাখ এবং বার্ষিক নবায়ন ফি ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংকিং সেক্টরগুলো সাধারণত এই সেবা নিয়ে থাকে। ক্যাটাগরি বি হলো অব্যবসায়িক শর্টকোড। এর বরাদ্দ ফি ৫০ হাজার এবং নবায়ন ফি ২৫ হাজার টাকা। ই-হেলথ, ই-এডুকেশন, ই-গভর্নেন্স এ জাতীয় সেবাগুলো এই ক্যটাগরির আওতায় দিয়ে থাক।

বিটিআরসি আগে ৩ বা ৪ ডিজিটের শর্টকোড বরাদ্দ দিলেও বর্তমানে ৫ ডিজিটের নম্বর বরাদ্দ দিয়ে থাকে। ৩, ৪ বা ৫ ডিজিটের নিজস্ব শর্টকোড রয়েছে মোবাইল অপারেটরদের। মূলত নিজেদের সেবা দেয়ার জন্যই তারা নিজস্ব শটকোড ব্যবহার করে থাক। একজন মোবইল অপারেটরের শর্টকোড অন্য মোবাইল অপারেটর ব্যবহার করতে পারে না।

মোবাইল অপারেটররা নানা ধরনের ভ্যালু অ্যাডেড (ওয়েলকাম টিউন, কলার টিউন ইত্যাদি) সেবা প্রদান করতে নিজস্ব শর্টকোড ব্যবহার করে থাকে। এই শটকোডের মাধ্যমে তারা নানারকম রেজিস্ট্রেশন, ভোটিং, পোলিং, কুইজ এবং বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। এগুলোর মাধ্যমে পরীক্ষার আসন বিন্যাস, ফলাফল প্রকাশসহ অনেক কিছুই জানানো যায়।

তবে বিটিআরসি থেকে শর্টকোড বরাদ্দ নিলেই কিন্তু তা ব্যবহার করা বা সেবা দেয়া যায় না। দেশের যেকোনও জায়গায় সেবা দিতে সক্ষম আইপিটিএসপি বা পিএসটিএন অপারেটরের কাছ থেকে সেবা নিতে হয় যাদের উন্নত ও পরিষ্কার ভয়েস কল থাকতে হবে এবং কলড্রপের হার হবে শূন্য।

পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন