সিলেটে ইউপি চেয়ারম্যান, ওসিসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

  14-10-2019 07:50PM

পিএনএস ডেস্ক : অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে সাড়ে ৪শ কোটি টাকা ভারতে পাচার, ঘুষ আদায় ও চোরাই গবাদিপশুর অবৈধ হাট বসিয়ে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে সিলেটে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ওসি ও সাবেক ছাত্রলীগ-ছাত্রদল নেতাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সোমবার সিলেটের সিনিয়র স্পেশাল জজ এবং জেলা ও দায়রা জজ মো. বজলুর রহমান মামলা আমলে নিয়ে আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, সিলেটকে নির্দেশ দিয়েছেন। গত ১০ অক্টোবর আইনজীবী এম মঈনুল হক বুলবুলের দায়েরকৃত মামলা আমলে নিয়ে বিচারক এই রায় দিয়েছেন। সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর জসিম উদ্দিন জানান, গত ১০ ও ১৩ অক্টোবর মামলার গ্রহণীয়তা নিয়ে দু’দিন শুনানি শেষে সোমবার বিচারক রায় দেন।

এই মামলায় আসামিরা হলেন- কানাইঘাট উপজেলার দিঘিরপাড় পুর্ব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হোসেন কাজল, দর্পনগর পশ্চিম গ্রামের জুনাব আলী ওরফে জুনাইয়ের ছেলে, সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তাজিম উদ্দিন, একই গ্রামের জুনাব আলীর ছেলে জহিরুল ইসলাম জহির, বটল হাজীর ছেলে দিঘীরপাড় ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো. আবু রায়হান পাভেল, মাছুগ্রাম গ্রামের উনু মিয়ার ছেলে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এম মামুন উদ্দিন, দক্ষিণ কুয়রেরমাটি গ্রামের মুতলিব শেখের ছেলে শাহাব উদ্দিন, দর্পনগর পশ্চিম গ্রামের মৃত ফরিদ আলীর ছেলে মুসলিম উদ্দিন এবং কানাইঘাট থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও বর্তমানে গোয়াইনঘাট থানার ওসি মো. আব্দুল আহাদসহ অজ্ঞাত আরও ২/৩ জন।

আদালতে দায়েরকৃত মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত কানাইঘাট থানার সাবেক ওসি মো. আব্দুল আহাদের প্রত্যক্ষ সহায়তায় উপজেলার সড়কের বাজারে আব্দুল গফুর ওয়াকফ এস্টেটের ভূমি ব্যবহার করে অবৈধ গবাদিপশুর হাট বসানো হয়। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে ও মামুন উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে সাবেক ছাত্রদল নেতা আবু রায়হান পাভেলকে বাজারের হাসিল আদায়কারী সাজিয়ে জহিরুল ইসলাম জহির, শাহাব উদ্দিন ও মুসলিম উদ্দিন পুলিশ ও বিজিবির নামে ঘুষের টাকা আদায় করেন। এই হাটের জন্য ভারত থেকে গবাদিপশু চোরাচালানের মাধ্যমে আনতে আলী হোসেন কাজল ও তাজিম উদ্দিনের নিযুক্ত লোকজন হুন্ডির মাধ্যমে বাংলাদেশি সাড়ে ৪শ কোটি টাকা পাচার করেছেন।

এই মামলার বাদি এম মঈনুল হক বুলবুল জানান, গত ১ আগস্ট এই বাজারে কুরবানির পশু কিনতে গেলে আসামিরা পুলিশের লাইনের নামে ৮শ টাকা ঘুষ দাবি করেন। এ নিয়ে কথাকাটাকাটি হলে তিনি বিষয়টি কানাইঘাট থানার তৎকালীন ওসি মো. আব্দুল আহাদকে জানালে তিনি ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ম্যানেজ করে নেওয়ার পরামর্শ দেন। এ অবস্থায় তিনি গত ১৮ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশন, সিলেট কার্যালয়ে গেলে তারা আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট মো. মাহবুব হুসাইন জানান, এটি একটি বড় দুর্নীতির মামলা। এটি এ মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে বড় চোরাচালনের গরুর হাট। প্রতিদিন শত শত ট্রাকে এ বাজার থেকে সিলেট ও দেশের বিভিন্ন স্থানে চোরাচালানের গরু প্রকাশ্যে বিনা বাধায় সরবরাহ করা হয়। তিনি বলেন, এ মামলা দায়ের করার পর শুনানি করতে গেলে অদালতের অতীতের সকল রেওয়াজ ভেঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষ তীব্র আপত্তি জানায়। যেখানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ থাকার কথা, সেখানে দুর্নীতিবাজদের বাঁচাতে এপিপি তীব্র আপত্তি দেন। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।

পিএনএস/মো. শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন