পিএনএস ডেস্ক: চালের সরবরাহ স্বাভাবিক ও আপাতত সংকট না থাকলেও এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে বাজারে।
পাইকারি পর্যায়ে দাম না বাড়লেও কিছু কিছু দোকানে বাড়তি দামে চাল বিক্রি হচ্ছে। অনেক খুচরা দোকানে আগের দামে চাল বিক্রি হচ্ছে। তবে তারাও চালের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর রামপুরা, মধুবাগ, মালিবাগ ও কাওরানবাজার যাচাই করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
খুচরা বিক্রেতাদের দাবি করছেন, আমনের ভরা মৌসুমেও চাহিদা অনুসারে সরবরাহ পাচ্ছি না। এখন পর্যন্ত আগের দামে অধিকাংশ চাল বিক্রি করলেও বেশিদিন সেটা সম্ভব হবে না। আর একটি বিষয় হচ্ছে গত এক মাস ধরেই অল্প অল্প করে দাম বেড়েছে। অন্যদিকে আমদানি করা চাল এখনও বাজারে তেমন প্রভাব ফলেনি কিংবা দেশীয় নতুন চালের সরবরাহ বাজারে তেমন আসেনি।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকারি বাজারে মিনিকেট চালের দাম কেজি প্রতি ৭৫-৭৯ টাকা, আটাশ বালাম কেজি প্রতি ৬০-৬৪ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬-৮৪ টাকা, স্বর্ণা ৫১.৬০ থেকে ৫৪ টাকা, পাইজাম ৫৭ থেকে ৫৮ টাকা, বাসমতী ৯৪ থেকে ৯৮ টাকা ও চিনিগুঁড়া ১০০-১১০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
যার বিপরীতে খুচরা পর্যায়ে মিনিকেট চাল কেজি প্রতি ৮৪-৮৫ টাকা, আটাশ বালাম ৬৫-৬৮ টাকা, স্বর্ণা মোটা চাল ৫৬-৫৮ টাকা, নাজিরশাইল ৮০-৮৫ টাকা, বাসমতী ৯৫ থেকে ১০০ টাকা, চিনিগুঁড়া ১৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাওরানবাজারের পাইকারি বিক্রেতা শাহীন বলেন, আগের দামেই চাল বিক্রি করছি। এখনো দাম বাড়েনি। তবে চালের সরবরাহ তুলনামূলক কম, নতুন চাল বাজারে না আসা পর্যন্ত চালের বাজার অস্থির হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমদানি করা চাল এখনো বাজারে তেমন আসেনি, দাম কমার সম্ভাবনা আপাতত নেই। সবচেয়ে বড় কথা হল সিন্ডিকেট না ভাঙা পর্যন্ত দাম কমবে না।
রামপুরার এক বিক্রেতা মাহবুব বলেন, আমরা বেশি দামে কিনলে বেশিতেই বিক্রি করি। গত এক মাস ধরেই চালের দাম আকস্মিক বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন করে বাড়েনি। নতুন চালের পর্যাপ্ত সরবরাহের অপেক্ষায় আছি।
গত ২০ অক্টোবর ও ১ নভেম্বর বাজারে চালের সরবরাহ বৃদ্ধি করে দেশের চালের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে আমদানি শুল্ক ও রেগুলেটরি শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়। দুই দফায় চালের ওপর বিদ্যমান আমদানি শুল্ক ও রেগুলেটরি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে শুধু ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর রাখা হয়। ফলে চালের দাম প্রতি কেজিতে অন্তত ৯.৬০ টাকা কমবে বলে আশা করেছিল এনবিআর।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, দেশে মাথাপিছু দৈনিক চাল গ্রহণের পরিমাণ ৩২৮ দশমিক ৯ গ্রাম। শহরাঞ্চলে মাথাপিছু চাল গ্রহণের পরিমাণ ২৮৪ দশমিক ৭ গ্রাম। সব মিলিয়ে ১৭ কোটির মানুষের প্রতিদিনের হিসাব ধরে বছরে প্রয়োজন হয় প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ টন চাল। সেখানে গত ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে চালের চার কোটি টনের বেশি চাল উৎপাদন করে বাংলাদেশ।
অন্যদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন খাদ্য গুদামে মজুত আছে চাল সাত লাখ ৪৪ হাজার টন, গম চার লাখ ৪৮ হাজার টন ও ধান চার হাজার টনের বেশি মজুত রয়েছে।
এসএস
সংকট নেই, তবু অস্থিরতা চালের বাজারে
01-02-2025 08:41PM