মৃত্যুর পরেও যে গায়কের গান যুক্তরাজ্যের টপ চার্টে

  27-10-2024 07:19PM

পিএনএস ডেস্ক: জনপ্রিয় ব্রিটিশ সংগীতশিল্পী লিয়াম পেইন মাত্র ৩১ বছর বয়সেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন। চলতি মাসের (১৬ অক্টোবর) আর্জেন্টিনার বুয়েন্স এইরেসে একটি হোটেলের চতুর্থ তলা থেকে পড়ে মারা যান বিখ্যাত ব্যান্ড দল ‘ওয়ান ডিরেকশন’-এর এই সদস্য। তবে তার মৃত্যুর আসল কারণ নিয়ে চলছে তর্ক-বিতর্ক।

আর্জেন্টিনার প্রসিকিউটর অফিস নিশ্চিত করেছে যে, ‘ওয়ান ডিরেকশন’ তারকা একাধিক ট্রমার কারণে মারা গেছেন। যার ফলে বুয়েন্স আয়ার্সের থার্ড ফ্লোরের হোটেলের বারান্দা থেকে পড়ার পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছিল

বুয়েন্স আইরেসের জরুরি পরিষেবার প্রধান প্রকাশ করেছেন যে পেইনের মৃত্যু ‘ক্রেনিয়াল ফ্র্যাকচার এবং অত্যন্ত গুরুতর আঘাতের’ কারণে হয়েছে। একটি নতুন ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, তার মাথার আঘাতগুলো মারাত্মক ছিল।

এ ছাড়াও তার হোটেল রুমে পাওয়া পদার্থগুলো সম্ভাব্য অ্যালকোহল এবং ড্রাগ সেবনের ইঙ্গিত দেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেইন একাধিক আঘাত এবং অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক রক্তক্ষরণের কারণে মারা গিয়েছেন।

আর্জেন্টিনার ময়নাতদন্ত পরবর্তী রিপোর্টে বলা হয়েছে, লিয়াম পেইনের মৃত্যুতে তারা একাধিক অসংগতি খুঁজে পেয়েছেন, যার ফলে তার মৃত্যুর কারণকে প্রশ্নবিদ্ধ হিসেবে ধরা হচ্ছে। ‘যদিও সবকিছু ইঙ্গিত দেয় যে মৃত্যুর আগ মুহূর্তে সংগীতশিল্পী একা ছিলেন এবং তিনি মাদকের অপব্যবহার থেকে এক ধরনের প্রাদুর্ভাবের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন, যার ফলে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তিনি ৪র্থ তলার বারান্দা থেকে লাফিয়ে পড়ে মারা যান।

ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যার ফলে ময়নাতদন্ত রিপোর্টে পেইনের শরীরে ২৫টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে, যা মূলত উঁচু থেকে পড়ে যাওয়ার কারণেই হয়েছে বলেই, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। তারা আরও জানিয়েছেন যে, মাথার আঘাতগুলি মারাত্মক ছিল এবং ‘মাথার খুলি, বুক, পেট এবং অভ্যন্তরীন অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোর বাহ্যিক রক্তক্ষরণও’ তার মৃত্যুর ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে।

এদিকে, মাত্র ৩১ বছর বয়সী এই সংগীত তারকার অকালমৃত্যুতে আবার চর্চায় উঠে এসেছে ওয়ান ডিরেশকনের গানগুলো। সেটা এতটাই যে আবার জায়গা করে নিয়েছে যুক্তরাজ্যের টপ চার্টে। ডেডলাইনের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, লিয়ামের মৃত্যুর এক সপ্তাহ না পেরোতেই ব্যান্ডটির প্রকাশ পাওয়া পাঁচটি অ্যালবাম যুক্তরাজ্যের টপ চার্টের তালিকায় ফিরেছে।

আর এ তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে ওয়ান ডিরেকশন ব্যান্ডটির তৃতীয় অ্যালবাম ‘মিডনাইট মেমোরিস’, সেরা ৪০-এ এর অবস্থান ১৩। অফিশিয়াল চার্ট কোম্পানি বলছে, অ্যালবামটির বিক্রি ও স্ট্রিমিং বেড়েছে ৫১৭ শতাংশ। এছাড়া তালিকার ২১ নম্বরে ‘মেড ইন দ্য এ.এম’, তালিকার ২২ নম্বরে ‘ফোর’, ২৫ নম্বরে ‘টেক মি হোম’ ও ৩৮ নম্বরে রয়েছে ব্যান্ডটির প্রথম অ্যালবাম ‘আপ অল নাইট’। এ ছাড়া ওয়ান ডিরেকশনের তিনটি একক গানও টপ চার্টের সেরা ৪০–এর তালিকায় ফিরেছে। এর সঙ্গে লিয়াম পেইনের গাওয়া সবশেষ একক ‘টিয়ারড্রপস’ও জায়গা নিয়েছে সেরা ১০০ চার্টে। তালিকায় এর অবস্থান ৮৫।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৩ সালের ২৯ আগস্ট উলভারহ্যাম্পটনে জন্ম লিয়াম পাইনের। ছোট থেকেই তিনি খেলাধুলার প্রতি ভালোবাসা ছিল তার। তাই লিয়াম নাম লিখিয়েছিলেন উলভারহ্যাম্পটন অ্যান্ড বিলস্টন অ্যাথলেটিকস ক্লাবে। তবে ১২ বছর বয়সে এক ফুটবল ম্যাচে ২৬ হাজার দর্শকের সামনে গান গাওয়ার পর লিয়াম পাইনের জীবন বদলে যায়। এরপর নাম লেখান জনপ্রিয় ব্রিটিশ টিভি শো ‘দ্য এক্স ফ্যাক্টর’-এ। এখানেই পরিচয় হয় নিয়াল হোরান, লুইস টমিলসন, হ্যারি স্টাইলস, জায়ান মালিকদের সঙ্গে। তাদের দল রিয়েলিটি শোতে তৃতীয় হয়। জন্ম হয় ওয়ান ডিরেকশনের।

‘আপ অল নাইট’, ‘টেক মি হোম’, ‘মিড নাইট মেমোরিস’, ‘ফোর’, ‘মেড ইন দ্য এ.এম’—আলোচিত পাঁচ অ্যালবাম উপহার দিয়ে ২০১৬ সালে ভেঙে যায় ওয়ান ডিরেকশন। অন্য সদস্যদের মতো লিয়ামও খুঁজে নেন নতুন পথ। একক শিল্পী হিসেবে দুনিয়ার নানা প্রান্তে পারফর্ম করছিলেন লিয়াম। ২০১৯ সালে তিনি মুক্তি দেন প্রথম একক অ্যালবাম ‘এলপিওয়ান’। প্রস্তুতি চলছিল দ্বিতীয় অ্যালবামের, তবে তার আগেই চলে গেলেন তিনি

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন