আমেরিকা না দিলেও ইউক্রেনকে সামরিক গোয়েন্দা তথ্য দিচ্ছে ফ্রান্স

  07-03-2025 09:52AM


পিএনএস ডেস্ক: সসম্প্রতি ইউক্রেনের সঙ্গে সব ধরনের গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্য দিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে আগামী দিনগুলোতে ইউক্রেনের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল।

এই অবস্থায় ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে ফ্রান্স। দেশটি ইউক্রেনকে সামরিক গোয়েন্দা তথ্য দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ফ্রান্স ইউক্রেনের সঙ্গে গোয়েন্দা বিভাগীয় তথ্য শেয়ার করছে বলে ফরাসি প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেবাস্তিয়েন লেকর্নু বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় বন্ধ করার পর ফ্রান্সের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।

এদিকে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে সাহায্যের জন্য ব্যয় ও অঙ্গীকার জোরালো করে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে মজবুত করার বিষয়ে আলোচনা করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে এক শীর্ষ সম্মেলনে সমবেত হন; ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

এরপরই কিয়েভের সঙ্গে সামরিক গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগির এই সিদ্ধান্ত নিলো ফ্রান্স। বৈঠকের আগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরা “আগামীতে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেবে।”

পাশাপাশি, নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্র সাহায্যদানের সিদ্ধান্ত বদল করায় উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন তিনি। ম্যাক্রোঁ বলেন, “ইউরোপের ভবিষ্যৎ ওয়াশিংটন বা মস্কোতে বসে নির্ধারণ করা যাবে না।”

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর এই সপ্তাহের শুরুতে কিয়েভের জন্য সামরিক সাহায্য বাতিল মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট। পরে সিআইএ পরিচালক জন র্যা টক্লিফ বলেন, কিয়েভের সঙ্গে গোয়েন্দা বিভাগীয় তথ্য বিনিময় বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

২০২২ সালে যুদ্ধের শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে উল্লেখযোগ্য হারে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেছে; যার মধ্যে রুশ বাহিনীকে নিশানা করতে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর প্রয়োজনীয় একান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও রয়েছে।রকারি সফরে যুক্তরাজ্যে গিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেখানে তিনি যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং এই বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক নানা বিষয়সহ বাংলাদেশ ও ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেছেন।

এছাড়া বৈঠকে বর্তমান বিশ্বের ভূরাজনৈতিক নানা ইস্যুও ভারতীয় ও ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনায় স্থান পেয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, যুক্তরাজ্যে সরকারি সফরে থাকা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এবং ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেছেন। দুই মন্ত্রী ইউক্রেন, বাংলাদেশ, পশ্চিম এশিয়া এবং কমনওয়েলথ নিয়েও আলোচনা করেছেন বলে জয়শঙ্কর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ বলেছেন।

অবশ্য বাংলাদেশ বিষয়ে তারা ঠিক কী আলোচনা করেছেন, তা নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি জয়শঙ্কর।

সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া ওই পোস্টে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা ইউক্রেন ইস্যু, পশ্চিম এশিয়া, বাংলাদেশ, কমনওয়েলথসহ নানা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেছি। অনিশ্চিত ও অস্থির বিশ্বে ভারত-যুক্তরাজ্য স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির পথে অবদান রাখছে।”

প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গত বছরের আগস্টের শুরুতে শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। তারপর থেকে তিনি ভারতেই নির্বাসনে রয়েছেন। গত বছরের আগস্টে পদচ্যুত হয়ে ভারতে পালানোর পর হাসিনাকে ঘিরে কিছু জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছিল।

শোনা গিয়েছিল, হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলেও যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়েছিলেন। কিন্তু যুক্তরাজ্য তাকে আশ্রয় দেয়নি। ইউরোপের এই দেশটি সেসময় বলেছিল, এই পরিস্থিতিতে কাউকে আশ্রয় দেওয়ার কোনও আইনি ব্যবস্থা তাদের নেই।

এছাড়া শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ও দেশ ছেড়ে পলায়নের পর তার পরিবারের সদস্যসহ অনেকের বিরুদ্ধেই নানা অভিযোগ বের হয়ে আসছে এবং দুর্নীতিবিরোধী তদন্ত চলছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে তাদের একজন ব্রিটিশ লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি শেখ হাসিনার ভাগ্নী।

বাংলাদেশে দুর্নীতির তদন্তে নাম আসার পর গত জানুয়ারি মাসে টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। মূলত টিউলিপ ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার মন্ত্রিসভার সদস্য এবং পদত্যাগের আগে তিনি ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার কাজ ছিল যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া।

অবশ্য লন্ডনে হাসিনা ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে উপহার নেওয়া ছাড়াও; সাবেক এক বাংলাদেশি এমপির কাছ থেকে ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের দুটি টিকিট নিয়েছিলেন টিউলিপ। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অন্যান্য আরও আর্থিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে।

এসবের মধ্যেই দেশটির বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টিও টিউলিপকে বরখাস্তের দাবি জানিয়েছিল।


পিএনএস/আনোয়ার


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন