ঋণখেলাপিরা যাতে মনোনয়ন না পান, চেষ্টা করা হবে: মির্জা ফখরুল

  18-01-2025 11:40PM

পিএনএস ডেস্ক: ঋণখেলাপিরা যাতে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন না পান, সেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, রাতারাতি সবকিছু পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তবে ঋণখেলাপিরা যাতে মনোনয়ন না পান, সে বিষয়ে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবেন তাঁরা।

আজ শনিবার ‘শ্বেতপত্র এবং অতঃপর: অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, সংস্কার ও বাজেট’ শীর্ষক দিনব্যাপী সিম্পোজিয়ামের শেষ পর্বে এ কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এই সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করেছে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি ২০২৪।

সিম্পোজিয়ামের শেষ পর্বে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সঞ্চালক ছিলেন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

অনুষ্ঠানে প্রথমে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান। এরপর মির্জা ফখরুল বক্তব্য দেন। পরে তিনি দর্শকসারি থেকে আসা বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব দেন।

এর মধ্যে মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে রেহমান সোবহান জানতে চান, ঋণখেলাপিরা নির্বাচনের আগমুহূর্তে ৫ শতাংশ পরিশোধ করে ভোটে অংশ নেন, বিএনপি এ বিষয়ে কী করবে। জবাবে মির্জা ফখরুল ঋণখেলাপিরা যাতে ভোটে অংশ নিতে না পারেন, সে বিষয়ে চেষ্টা চালাবেন বলে আশ্বস্ত করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন, ছয় মাসের মধ্যে সব সমস্যার সমাধান করে ফেলা অসম্ভব। এ জন্য নির্বাচনের ঘোষণাটা তাড়াতাড়ি দরকার। নির্বাচনের মধ্য দিয়েই জনগণের কাছে যাওয়া সম্ভব। তাঁদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা সম্ভব। বিগত ১৬ বছর দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের চেষ্টা হয়নি। আবার চেষ্টাটা চালু করতে হবে।

ছয় মাসের মধ্যে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়—ফখরুলের এমন বক্তব্যকে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদের দিকে ইঙ্গিত হিসেবে মনে করেন রেহমান সোবহান। তিনি মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে বলেন, ছয় মাসের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ শেষ করার দাবি তাড়াহুড়া হয় কি না? জবাবে মির্জা ফখরুল হাসতে হাসতে বলেন, ‘এটা আমাদের দলীয় কৌশল (স্ট্র্যাটেজি)।’

অর্থ পাচারকারীদের আবার নির্বাচনে দাঁড়ানোর সম্ভাবনার বিষয়টি প্রশ্নে উঠে এসেছে। জবাবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এই সন্দেহ একেবারে অমূলক নয়। তাঁরা যাতে নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পারেন, সেই চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বিষয়টি বহুবার পরিষ্কার করেছি। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে দেশের জনগণ। আমরা রাজনৈতিক দলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেব না।’

বিএনপি দ্রুত নির্বাচনের জন্য কেন এত চাপ দিচ্ছে—এ বিষয়ে দর্শকসারি থেকে প্রশ্ন করেন একজন ছাত্রপ্রতিনিধি। জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, তাঁরা বিশ্বাস করেন, সংস্কারসহ সব সমস্যার সমাধান নির্বাচিত সরকারই করতে পারে।

অধ্যাপক রেহমান সোবহান তাঁর বক্তব্যে ঋণখেলাপি, অর্থ পাচার, ব্যাংক ব্যবস্থার দুরবস্থাসহ দেশের অর্থনীতির নানা দুর্বল দিকের কথা উল্লেখ করে বলেন, এর কোনোটিই নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরে চলে এসেছে। তবে বিগত সরকারের অপশাসন ঋণখেলাপির বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ হিসেবে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। পুরো আর্থিক খাত রাজনৈতিক বিবেচনায় পরিচালিত হয়েছে।

এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা স্বল্প সময়ের মধ্যে সম্ভব নয় মন্তব্য করে রেহমান সোবহান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সব সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। তবে তারা কিছু শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। ভবিষ্যৎ নির্বাচিত সরকারের ওপর গুরুদায়িত্ব পড়বে। তাদেরকে কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে হবে।

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন