তালাবদ্ধ ঘরে গৃহবধূর মরদেহ, স্বামী পলাতক

  25-12-2024 01:09AM

পিএনএস ডেস্ক: নীলফামারীর সৈয়দপুরে বিয়ের এক মাস পরেই তালাবদ্ধ ঘর থেকে শবনম পারভীন (২৮) নামে এক গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে গৃহবধূর স্বামী পলাতক রয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে শহরের নয়াবাজার এলাকায় বাড়ির তালা ভেঙে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দিন।

হত্যার শিকার গৃহবধূ শবনম পারভীন সৈয়দপুর পৌর শহরের ফুচকা ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী ও উপজেলার বাঙালীপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মণপুর পীরপাড়ার মৃত আব্দুর রহমানের মেয়ে। এটি তার দ্বিতীয় বিয়ে ছিল। তার এক বছর বয়সী একটি মেয়ে সন্তান আছে।

গৃহবধূ শবনম পারভীনেরর স্বামী জাহাঙ্গীর হোসেন সৈয়দপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মুন্সিপাড়ার (দর্জিপাড়া) মমতাজ হোসেনের ছেলে। তিনি দুই সন্তানের জনক। প্রথম স্ত্রী থাকাবস্থায় এক মাস আগে নিহত শবনমকে বিয়ে করেন। কিন্তু এতদিন শবনম তার মায়ের বাড়িতেই ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) শহরের নয়াবাজার এলাকায় আব্দুল মজিদ খানের বাসার একটা রুম ভাড়া নিয়ে সেখানে শবনমকে এনে রাখেন জাহাঙ্গীর। এদিকে আজ সকাল থেকে ওই ঘরে তালা ঝুলতে দেখেন স্থানীয়রা। সন্ধ্যার দিকে শবনমের বোন রক্সি পারভিন খোঁজ করতে এসে ঘরের জানালা দিয়ে দেখতে পান খাটের ওপর লেপ-কাঁথা দিয়ে পেঁচানো অবস্থায় নিথর দেহ পড়ে আছে। পরে পুলিশে খবর দেয়া হলে সহকারী পুলিশ সুপার এ কে এম ওয়াহিদুন্নবী (সৈয়দপুর সার্কেল) ও সৈয়দপুর থানার ওসি ফইম উদ্দিন ঘটনাস্থলে এসে তালা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করেন।

এ ব্যাপারে শবনমের বোন রক্সি পারভিন জানান, দেড় মাস আগেই শহরের ফুচকা বিক্রেতা জাহাঙ্গীরের সাথে আমার বোনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর পরই কিছুটা মনোমালিন্য চলছিল তাদের। বোনকে নিয়ে সে কোথায় ভাড়া থাকে সেটাও আমরা জানতাম না। এরই মাঝে আজকে ফোনে দুলাভাইয়ের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, তোর বোনকে মেরে ফেলে দিয়েছি, এসে লাশ নিয়ে যা।

পরে কোথায় ভাড়া থাকে তা খবর নিয়ে নয়াবাজার এলাকায় আসি। সেখানে জানলাম, কালকেই তারা এখানে একটি বাড়িতে ভাড়ায় উঠেছে। বাড়িটি বাইরে থেকে তালা লাগানো ছিল। জানালা থেকে দেখি বোনের নিথর দেহ খাটে পড়ে আছে।

মেয়ের হত্যাকারীর বিচার দাবি করে শবনমের মা ফারজানা বলেন, জাহাঙ্গীর ও তার প্রথম স্ত্রী পরিকল্পনা করে আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে। আমি এখন মেয়ের অবুঝ মেয়েটিকে নিয়ে কিভাবে বাঁচবো। আমার মেয়ের হত্যাকারীদের আমি বিচার চাই।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে তালা ভেঙে ভাড়া নেওয়া ঘর থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করতে হবে। সেজন্য আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। মামলা হলে আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হবে চলবে বলেও জানান তিনি।

পিএনএস/রাশেদুল আলম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন