রাতের টিফিন খেয়ে টঙ্গীতে পোশাক কারখানার শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ

  24-01-2025 01:51AM

পিএনএস ডেস্ক: গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি কারখানায় টিফিন খেয়ে শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাত নয়টার দিকে টঙ্গীর সিংবাড়ী মোড় এলাকার বারাকা ফ্যাশন লিমিটেড নামক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।

অসুস্থ শ্রমিকদের রাতেই টঙ্গীর গুটিয়া এলাকার ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বারাকা ফ্যাশনে সহস্রাধিক শ্রমিক কাজ করেন। প্রতিদিনের মতো আজ রাতে কারখানায় কাজ চলমান অবস্থায় রাত ৯টার দিকে টিফিন দেয়া হয়। এরপর কর্মরত শ্রমিকেরা টিফিন খাওয়ার সময়ই বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। আস্তে আস্তে অসুস্থতার সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। অতঃপর অসুস্থ শ্রমিকদের টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল ও গুটিয়া ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে নেয়া হয়।

অসুস্থ শ্রমিক হালিমা খাতুন, সবুজা বেগম, নুরজাহান ও রুবিনা জানান, রাতের টিফিন হিসেবে ডেনিস, কেক, কলা ও ডিম দেওয়া হয়। এগুলো খাওয়ার পরেই আস্তে আস্তে শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে মাটিতে ঢলে পড়তে থাকে। তার সাথে পেটে জ্বালাপোড়া, পেট ব্যাথা ও বমি বমি ভাব শুরু হয়।

সুইং সেকশনের শ্রমিক ইমরান জানান, কারখানার সাথেই আমার বাসা। টিফিন দেওয়ার পর আমি বাসায় চলে যাই। বাসায় গিয়ে আমার মেয়ে ইরানি ও শালিকা মিমকে টিফিন খেতে দেই। তারা টিফিন খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে নিয়ে আসি।

কারখানার শ্রমিক সূত্র জানা যায়, বৃহস্পতিবার প্রায় এক হাজার শ্রমিককে ওভারটাইমে কাজ করানোর জন্য রাখা হয়। রাত আটটার দিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের টিফিন সরবরাহ করে। এর পরই অসুস্থ হতে থাকেন শ্রমিকরা। রোগীর সংখ্যা বেশি হতে থাকায় কারখানার ভেতর প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে স্থানীয় একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বারাকা ফ্যাশন লিমিটেড শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. হাসান আলী বলেন, বৃহষ্পতিবার কারখানাটিতে হাজার শ্রমিক কাজ করছিলেন। আজ ওভারটাইম করানোর কথা ছিলো। পরে রাতে টিফিন খেয়ে প্রায় ৫০ জন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থ শ্রমিকদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

বারাকা ফ্যাশন লিমিটেড কারখানার মানব সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা শাকিল আহমেদ বলেন, শ্রমিকরা অসুস্থ হবার পর কারখানার ভেতরেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। অসুস্থ শ্রমিকদের সংখ্যা বাড়লে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

গাজীপুর শিল্প পুলিশ পরিদর্শক (টঙ্গী জোন) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, অসুস্থদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার শাহরিয়া লুনা বলেন, সাধারণত মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার খেয়ে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বমি, জ্বর ও পেট ব্যাথা হয়। কিন্তু হাসপাতালে আসা রোগীদের যে নমুনা দেখলাম তাতে মনে হচ্ছে সিরেটিভ বা ড্রাগ মিশ্রিত খাবার খেলে এমনটা হয়।

টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসকান্দার হাবিবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সম্ভবত ফুড পয়জনিং এর কারণে শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ বিষয়ে কারখানা মালিক গোলাম রব্বানী চৌধুরীর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

পিএনএস/রাশেদুল আলম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন