সরিষার ফুলে মৌমাছির গুঞ্জণে আন্দোলিত কৃষকের মন

  24-01-2018 07:11PM

পিএনএস, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : সুন্দরবন উপকূলীয় লবণ পানির খুলনার পাইকগাছায় পরিবেশ বিপর্যয়ে এবার সরিষার আবাদ কম হয়েছে। তবে আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশে উৎপাদন ভাল হবে বলে মনে করছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। আবাদ এলাকার প্রান্তর জুড়ে যতদূর চোখ যাচ্ছে শুধু হলুদের সমারোহ। সময়মত মাটিতে জো বা উপযোগীতা না আসায় আবাদ কম হয়েছে, তবে মৌসুমে আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশে সরিষার ক্ষেত ভরে উঠেছে ফুলে ফুলে। প্রান্তর জুড়ে মৌমাছির গুঞ্জণে আন্দোলিত হচ্ছে কৃষকের মন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় সর্বমোট ৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে স্থানীয় জাতের ৫ হেক্টর ও উফশি জাতের ৭০ হেক্টর। কৃষকদের উদৃতি দিয়ে কৃষি অফিসের দাবি, পরিবেশ বিপর্যয়ে আবাদ উপযোগী উর্বর জমিতে এবার সময় মত মাটিতে জো না আসায় সরিষার আবাদ কম হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কৃষকদের দাবি, উপকূলীয় লোনা পানি অধ্যুষিত চাষাবাদ নির্ভর করে অনেকটা প্রকৃতির উপর। অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকায় পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় অনুকূল পরিবেশ বিশেষ করে জো-আসতে দেরি হয়। আর এতে করে ঐসকল এলাকায় এবার সরিষার আবাদ হয়নি।

লবণ পানির আধিক্যের ফলে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে মাত্র ৪ টি ইউনিয়নে সরিষার আবাদ হয়েছে। তবে চাঁদখালী, গড়ইখালী, লতা ও দেলুটির কিছু কিছু এলাকার সামান্য জমিতেও আবাদ হয়েছে সরিষার। উপজেলার গদাইপুরে স্থানীয় জাতের ১ হেক্টর ও উফশি জাতের ১২ হেক্টর জমিতে, কপিলমুনি স্থানীয় ২ ও ১৮ হেক্টর জমিতে উফশি, হরিঢালী স্থানীয় ১ ও উফশি ২০, রাড়–লী স্থানীয় ২ ও উফশি ১০, চাঁদখালী উফশি ৫, গড়–ইখালী উফশি ৩, লতা উফশি ১ ও দেলুটী ইউনিয়নে মাত্র ১ হেক্টর জমিতে উফসি জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে। সূত্র জানায়, কৃষকরা বারি সরিষা ১৪-১৫, টরি ৭, এসএম ৭৫ ও রাই ৫ জাতের সরিষা আবাদ করেছেন।

সরেজমিনে ক্ষেত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইতোমধ্যে সরিষার ফুল ঝরতে শুরু করেছে। কোনো কোনো এলাকায় সরিষার দানা বাধতে শুরু করেছে। উপজেলার গোপালপুর গ্রামের আদর্শ কৃষক রফিকুল ইসলাম ও আব্দুর রহিম জানায় তাদের ক্ষেতের আবাদকৃত সরিষা ভালো হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, উপজেলার কৃষকরা মূলত তাদের ধানের জমিতেই সরিষার আবাদ করেন। নান সংকটে দেরিতে ধান পাকায় তা কাটতে দেরি হওয়ায় মূলত সরিষার আবাদ কিছুটা কম হয়েছে। এক্ষেত্রে কৃষকরা আগাম জাতের ধান চাষ করলে পরে সরিষার আবাদে পুররোটা সময় কাজে লাগাতে পারবেন। সেক্ষেত্রে কৃষকদেরকেও আগাম জাতের ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

উপকূলীয় লবণ পানির এলাকায় নিচু জমির পানির স্তর কিছুটা নিচে নেমে জাওয়ায় জো আসতে বা আবাদ উপযোগী অনুকূল পরিবেশ আসতে কিছুটা দেরি হওয়াও আবাদ কম হওয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন। সব মিলিয়ে আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ বজায় থাকলে কৃষকরা এবার আশাতীত ফলন পাবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন