নতুন প্রজাতির পোকার আক্রমণ : আতঙ্কিত ৮ গ্রামের মানুষ

  18-07-2019 04:32PM

পিএনএস, মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ পল্লীতে নতুন প্রজাতির এক পোকার আক্রমণে অতিষ্ট হয়ে পরেছে ৮ গ্রামের মানুষ । বাড়ি-ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন অনেকে। স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা । এ পোকার আক্রমন থেকে রক্ষা পাচ্ছে না পশু-পাখিও ।

সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার জিউধরা ইউনিয়নের বরইতলা, পাশখালি, বাইনতলা, বটতলা, লক্ষিখালী, সোনাতলা, বারইখালী ও ডুমুরিয়া গ্রামে গত এক সপ্তাহ ধরে বিছা সদৃশ কালো রংয়ের এক ধরনের পোকার আভির্ভাব হয়েছে। এসব পোকা লম্বায় আড়াই ইঞ্চি। দেথতে অবিকল বিছে পোকার মতো দেখালেও এর গায় কোন কাটা বা আল নেই।

পোকাগুলো সাধারণত গেওয়া গাছ থেকে পাতা খেয়ে ঝাজরা করে গাছগুলোকে বিনষ্ট করছে। গেওয়া গাছের পাতা খাওয়া শেষ হলে বাবলা কিংবা অন্য প্রজাতির গাছে আশ্রয় নিয়ে পাতা সাবাড় করছে। গাছের পাতা না পেয়ে হাজার হাজার পোকা ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে একেবারে বসতবাড়িতে। মানুষকেও আক্রমণ করছে। মানুষের দেহে লাগলে সারা শরীর চুলকানির সাথে সাথে ফুলে যায়।

নাম না জানা এ পোকায় আক্রান্ত হয়ে অনেকেই চিকিৎসকের স্মরনাপন্ন হয়েছেন। ইতোমধ্যে এ পোকায় আক্রান্ত হয়ে যারা চিকিৎসা নিয়েছেন তারা হলেন, বরইতলা গ্রামের মো. শাহাজাহানসহ (৬০) সুফিয়া বেগম(৫০), সেলিমা বেগম (৩০), রাহিলা বেগম (৫২), রহিমন বেগম (৪০), ডুমুরিয়া গ্রামের শিক্ষার্থী সাগর শেখ (১৯), ইমন শেখ (১৬) বাইনতালা গ্রামের এনামুল হাওলাদার (১৮), ফারুক বিশ্বাস (৬০)সহ অনেকে। জানাগেছে, ওই এলাকার ৮ গ্রামের হাজারো মানুষ এ পোকার আক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে। আক্রন্তরাসহ অনেকেই আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে বাড়ি-ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।

জিউধরা ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি অফিসার নজরুল ইসলাম জানান, পোকা প্রতিরোধে সভা করা হয়েছে। পোকামুক্ত করার পাউডার দিয়ে স্প্রে করার নির্দেশ দেয়ার পাশাপাশি গেওয়া গাছের ডাল-পালা কেটে দেয়া, করাত মিলের তুষ ও কেরাসিন মিশিয়ে গাছে ছিটিয়ে দেয়া, গরম তাপ দিয়ে ছ্যাকা দেয়ার জন্য স্থানীয়দের পরামর্শ দেয়া হয়েছে ।

উপজেলা কৃষি অফিসার মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, এ অঞ্চলের জন্য পোকাটি নতুন হতে পারে। তবে ভয় কিংবা আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই। এাঁ এক ধরনের প্রজাপতি এর জীবনচক্রের ৪টি স্তরের প্রথমে ডিম, ক্রীড়া, পুত্তল্লি ও পূর্ণবয়স্ক প্রজাপতি আকারে পরিনত হয়ে থাকে। অপ্রাপ্ত বয়সের সময় এ পোকার খাবারের চাহিদা থাকে বেশী থাকায় গাছ-পালার পাতা খেয়ে সাবার করে ফেলে। ইতোমধ্যে এ পোকার নমুনা কৃষি গবেষণ ইনষ্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কীটতত্ত্বকববীদ ড. জুলফিকার ও ড. দেবাশিষের পরামর্শ নেয়া হয়েছে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন