পহেলা জানুয়ারি কোন ক্লাসের শিক্ষার্থীদের কয়টি দেয়া হবে

  31-12-2024 11:23PM

পিএনএস ডেস্ক: রাত পোহালেই নতুন পাঠ্যবই আনতে স্কুলে ছুটবে শিক্ষার্থীরা। বই হাতে মেতে ওঠার অপেক্ষায় তারা। তবে এবার পাঠ্যবই ছাপানো শেষ না হওয়ায় বছরের শুরুতে সব শিক্ষার্থী বই পাচ্ছে না। ফলে স্কুলে গিয়েও বই না পেয়ে অনেকের মন খারাপ হতে পারে। এ কারণে কারা বই পাবে, কারা পাবে না- তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় অভিভাবক-শিক্ষকরা। সমালোচনায় তীরে বিদ্ধ হচ্ছে সরকারও।

প্রাথমিকে তিন শ্রেণির বই মিলবে
প্রাথমিকের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির বই ছাপা হচ্ছে ৯৮ লটে। যার মধ্যে ৭০ লটের বই ছাপা শেষ হয়েছে। বাকি ২৮ লটের বই ছাপাতে পুনরায় টেন্ডার দেওয়ায় দেরি হয়েছে। ফলে সেগুলো ছাপানো সম্ভব হয়নি।

যে ৭০ লটের বই ছাপা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে তিনটি বই বেশি ছাপা হয়েছে। সেগুলো হলো- বাংলা, ইংরেজি ও গণিত। এ তিনটি বই প্রাথমিকের প্রায় সব স্কুলের শিক্ষার্থীরা বুধবার (১ জানুয়ারি) হাতে পাবে। তবে বাকি বইগুলো হাতে পেতে আরও অন্তত ১৫ দিন অপেক্ষা করতে হতে পারে প্রাথমিকের এ তিন শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের।

চতুর্থ-পঞ্চম শ্রেণির বই নিয়ে শঙ্কা
চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বই বেশি। তবে তাদের বই ছাপানো এখনো শেষ হয়নি। সবেমাত্র এ দুই শ্রেণির বই ছাপানোর কাজে হাত দিয়েছেন ছাপাখানা মালিকরা। অনেক ছাপাখানা এখনো চুক্তিও করতে পারেনি।

এনসিটিবির প্রাথমিকের বই দেখভাল করছেন উৎপাদন নিয়ন্ত্রক আবু নাসের টুকু। তিনি বলেন, ‘অমরা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির বই ঠিকঠাক পাঠাতে পারছি। তবে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বইয়ের কাজ সেভাবে শেষ হয়নি। মাত্র ৯-১০টি উপজেলায় চতুর্থ ও পঞ্চমের কিছু বই পাঠানো হবে। সেগুলো অল্পকিছু শিক্ষার্থী পেতে পারে।’

মাধ্যমিকে ষষ্ঠ-সপ্তমের বই বেশি পাবে শিক্ষার্থীরা
মাধ্যমিক পর্যায়ে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বই বেশি ছাপাতে পেরেছে পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। বিভিন্ন উপজেলায় এ দুটি শ্রেণির দুটি বা তিনটি করে বই পাঠানো হচ্ছে। ফলে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা দুই-তিনটি করে বই হাতে পেতে পারে। তবে সব উপজেলার ষষ্ঠ-সপ্তমের শিক্ষার্থীরা আবার বই পাবে না।

এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘৩২৩ উপজেলায় মাধ্যমিক ও ইবতেদায়ির বই যাচ্ছে। এর বেশিরভাগই ষষ্ঠ-সপ্তমের দুটি বা তিনটি করে বই দিচ্ছি আমরা।’

দশমের বই গেছে ৩৮ জেলায়
দশম শ্রেণিতে এক বছর পড়ে ২০২৬ সালের শুরুতে এসএসসি পরীক্ষায় বসতে হবে শিক্ষার্থীদের। এ কারণে এবার দশমের বই আগে বিতরণে অগ্রাধিকার দিয়েছে সরকার। তারপরও এ শ্রেণির পাঁচ ভাগের এক ভাগ বই ছাপানো হয়েছে মাত্র।

এনসিটির বিতরণ নিয়ন্ত্রক শাখার তথ্যমতে, দশম শ্রেণিতে বইয়ের মোট সংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি। বিভাগ বিভাজন (বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও মানবিক) ফিরে আসায় বই বেড়েছে। সব বিভাগ মিলিয়ে বই ৩৩টি। ফলে মোট বইও বেশি ছাপাতে হচ্ছে।

বিতরণ নিয়ন্ত্রক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘দশম শ্রেণির এক কোটির মতো বই ছাপিয়ে স্কুলে পাঠানো হয়েছে। এ বইগুলো সেনাবাহিনী ছাপিয়ে দিয়েছে। এখনো চার কোটির বেশি বই ছাপাতে হবে। হয়তো জানুয়ারির ১৫ তারিখের মধ্যে দশমের শিক্ষার্থীরা বই পেয়ে যাবে। তাদের বই অগ্রাধিকার দিয়ে ছাপানো হচ্ছে।’

অষ্টম-নবমের বই ছাপা হয়নি
মাধ্যমিকের অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বছরের প্রথমদিনে একেবারেই বই পাবে না। নামমাত্র দু-এক উপজেলায় এ দুই শ্রেণির বই যেতে পারে। তবে সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত নন এনসিটিবির কর্মকর্তারাও।

এনসিটিবি সূত্র জানায়, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বই ছাপার কাজের চুক্তি করতে দেরি হয়েছে। এখনো বই ছাপা শুরু হয়নি। দু-একটা প্রেসকে কিছু বই ছাপিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করা হলেও তেমন সাড়া মেলেনি। ফলে অষ্টম ও নবমের বই দেরিতে যাবে।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘সব উপজেলায় আমরা কিছু না কিছু বই পাঠাচ্ছি। সব স্কুলেও কিছু না কিছু বই পাঠানো হয়েছে। বই একেবারে যায়নি এমন উপজেলা ও স্কুল থাকবে না। হয়তো সব শ্রেণির সব শিক্ষার্থী প্রথমদিনে বই হাতে পাবে না। তবে অল্প সময়ের মধ্যে আমরা ধাপে ধাপে শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেবো।’

পিএনএস/রাশেদুল আলম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন