তীব্র শীত ও সমুদ্রে মিলছে না প্রত্যাশিত মাছ, বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে

  27-12-2024 05:10PM

পিএনএস ডেস্ক: তীব্র শীত ও সমুদ্রে নিম্নচাপের কারণে সামুদ্রিক মাছের আমদানি কমেছে পিরোজপুরের পাড়েরহাটের মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে। এ মৌসুমে প্রতিদিন সাগর থেকে নানা ধরনের মাছবোঝাই ট্রলার আসার কথা থাকলেও আশানুরূপভাবে তা আসছে না এ অবতরণকেন্দ্রে। ফলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে সরগরম ও কানায় কানায় পরিপূর্ণ থাকা জেলার সবচেয়ে বড় এ মাছের বাজারের বেশিরভাগ জায়গাই ছিল ফাঁকা। চাহিদার তুলনায় কম মাছ ও মানুষের সামুদ্রিক মাছের প্রতি আগ্রহ বেশি থাকায় মাছ বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে।

জানা গেছে, পিরোজপুরের ২৫ হাজার ২০২ জন জেলে সাগরে মাছ ধরার ওপর নির্ভরশীল। মৌসুমে মাছ শিকারের উদ্দেশে তারা জাল ও ট্রলার নিয়ে সাগরে চলে যান। কিন্তু চলতি ভরা মৌসুমে সাগরে জাল ফেলে প্রত্যাশা অনুযায়ী মাছ পাচ্ছেন না তারা। মাছ শিকারে গিয়ে যে খরচ হয় তার অর্ধেকও উঠছে না আহরিত মাছ বিক্রির টাকায়। এমতাবস্থায় চরম সংকটে পড়েছেন তারা। ঋণ পরিশোধের চিন্তায় চরম হতাশায় ভুগছেন জেলেরা। এ ছাড়া মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে মাছ কম আসায় বিপাকে খুচরা ও পাইকারি ক্রেতা-বিক্রেতারাও।

সরেজমিনে শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) পিরোজপুরের পাড়েরহাটের মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে দেখা যায়, ভোরের আলো ফোঁটার আগেই পিরোজপুরের পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে সমুদ্র থেকে নানা ধরনের মাছ নিয়ে হাজির হন জেলেরা, শুরু হয় ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাক। তবে সমুদ্রে নিম্নচাপ থাকায় এ মৌসুমে আশানুরূপ মাছ আনতে পারেননি জেলেরা। অবতরণকেন্দ্রের বেশিরভাগ জায়গাই ছিল ফাঁকা। প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০টি ট্রলার এ অবতরণকেন্দ্রে আসার কথা থাকলেও এদিন এসেছে মাত্র চারটি ট্রলার। মাছও এসেছে চাহিদার তুলনায় অনেক কম। ফলে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এ মৌসুমের মাছ।

পিরোজপুর সদর উপজেলার চিথলীয়া গ্রামের জেলে আব্দুস সোহরাব বলেন, এ মৌসুমে মাছ ধরার সময় সাগরে নিম্নচাপ ছিল, তাই মাছ ধরতে পারি নাই। তা ছাড়া এখন শীত একটু বেশি হওয়ায় মাছ পানির অনেক নিচে থাকে তাই জালে ধরা পরে কম। এ মৌসুমে মাছ অনেক কম হওয়ায় মাছ বিক্রি করে আমাদের খরচের অর্ধেক উঠাতেই কষ্ট হয়ে যাবে।

স্থানীয় জেলে মো. নাইমুল ইসলাম বলেন, এ মৌসুমে আমরা বেশি মাছ ধরতে পারি নাই। নিম্নচাপ হওয়ায় গভীর সাগরে যেতে পারি নাই, তাই মাছ কম। দাম কিছুটা বেশি ছিল কিন্তু তাতেও খরচ উঠবে না। আশা করি সামনের মৌসুমে মাছ ধরতে পারবো।

পাড়েরহাটের মৎস্য অবতরণকেন্দ্রের আড়তদার মো. নাছির সরদার বলেন, এখন মাছ তুলনামূলক কম, তবে দাম বেশি। আজকে আড়তে প্রতি কেজি ছোট ইলিশ মাছ ৬৩০ টাকা, বড় ইলিশ ১৫০০ টাকা, পোয়া ১৪০ টাকা, লাক্ষ্যা মাছ ১১০০ টাকা, পাঙাস ১২০ টাকা, জাভা ৪২০ টাকা, তুলা ডাডি ৩৫০ টাকা, মরমা মাছ ৪০০ টাকা, ভোল মাছ ৭৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আগামী গোনে (মৌসুমে) মাছ বেশি হলে দাম কিছুটা কমতে পারে।

পাড়েরহাট মৎস্যজীবী সমাজকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আকন বলেন, নিম্নচাপের কারণে আবহাওয়া খারাপ থাকায় পিরোজপুরের মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে বর্তমানে মাছের আমদানি কিছুটা কম ফলে বাজারে সামুদ্রিক মাছের দাম তুলনামূলক বেশি এতে সাধারণ ক্রেতাদের এ মৌসুমে কিছুটা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে মাছ। তবে আশা করি মাছও বাড়বে দামও কমবে। মৌসুমে প্রতিদিন প্রায় এ বাজারে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকার মাছ কেনা-বেচা হয়। কোনো কোনো দিন কোটি টাকার মাছও কেনা-বেচা হয়।

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন