পিএনএস ডেস্ক : শেখ হাসিনা বিভিন্ন উসকানি দিয়ে এখন দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়ে প্রমাণ করেছেন- তিনি বাংলাদেশের মানুষ না। ভারতে আশ্রয় নিয়ে এখনো তিনি ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বাংলাদেশে যত অপকর্ম হয়েছে তা শেখ মুজিবুর এর আমলে এবং শেখ হাসিনার আমলে। শেখ মুজিবুর রহমান রক্ষী বাহিনী তৈরি করেছিল। বিরোধীদলের হাজার হাজার নেতা কর্মীকে হত্যা করেছিল। দেশের দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করে লাখ লাখ মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিল। দেশে এক দল কায়েম করেছিল। সেই ব্যবস্থা থেকে বাংলাদেশকে পুনরায় মুক্ত করেছিলেন স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি একটা একটা করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। যিনি রাজনৈতিক নেতা ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান তিনি দেশে স্বৈরাশশাসক প্রতিষ্ঠা করেন। আর যিনি মুক্তিযুদ্ধ করে চাকরিতে ফিরে গিয়েছিলেন। যার কাছে আশা করিনি তিনি জিয়াউর রহমান দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। সকল রাজনৈতিক দলকে রাজনীতি করার ব্যবস্থা করেন। সকল বন্ধ সংবাদপত্র খুলে দেন। এই জাতিকে উদ্বুদ্ধ করে কৃষি খাতে আমুল পরিবর্তন আনেন। বিদেশে চাল রপ্তানির ব্যবস্থা করেন।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার কাছে শেখ হাসিনা ১৯৯১ সালে পরাজিত হয়েছে এবারও বেগম খালেদা জিয়ার কাছে শেখ হাসিনা পরাজিত হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার শত নির্যাতনের মধ্যেও দেশ ছেড়ে পালায়নি। প্রমাণ করেছে তিনি দেশের নেত্রী, দেশের মানুষের নেত্রী। অপরদিকে শেখ হাসিনা এই দেশের মানুষের নেত্রী তো না সে একজন ডাকাত, খুনি, লুটেরা। তিনি ভারতে আশ্রয় নিয়ে এখনো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। যে ষড়যন্ত্রের কারণে বাংলাদেশে অবস্থিত আওয়ামী লীগরা অনিরাপদ হয়ে গেছে। বিশৃঙ্খলা বিএনপি পছন্দ করে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ উসকানি দিলে তার পরিণতি তাকে ভোগ করতে হবে।
শামসুজ্জামান বলেন, বিএনপি হাসিনার ফাঁদে পা দিতে চায় না বলেই দ্রুত নির্বাচনের কথা বলছে। উদ্দেশ্য সৎ হলে বিএনপির ৩১ দফা সরকার পড়ে দেখত। ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের পর নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হয়েছিল শেখ মুজিব, যার জন্য মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা অধরাই থেকে গিয়েছিল। ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থানই এই দেশে প্রথম না, ’৯০-এ তিনমাসের মধ্যে নির্বাচন করে এক বিচারপতি আদালতে ফিরে গেছেন।
তিনি বলেন, সরকার যদি রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা শোনে এবং সমাধান করতে চায়, তাহলে এক মাসের বেশি সময় লাগার কথা না। দুদু বলেন, যারা নির্বাচনে বাধা দিচ্ছে তারা তো অনেক বড় নেতা, অনেক বড় আন্দোলনকারী। নির্বাচন দিলে তো আপনাদের জয়ী হওয়ার কথা। নির্বাচন দিলে সমস্যা কোথায়? আমি ব্যক্তিগতভাবে একটা কথা বলি, আগামী নির্বাচনে বিএনপি তো জিতবেই। তারপরের নির্বাচনও বিএনপি জিতবে। কেন জিতবে? কারণ, বিএনপি জনগণের মধ্যে থাকতে চায়।
উপদেষ্টাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করতে পারেন না। আমাদের যারা সমন্বয়ক আছে তারা গাজীপুরে গিয়েছিল তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। লজ্জা থাকা উচিত আপনারা সরকারে থাকা অবস্থায় এ ধরনের ঘটনা ঘটে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সহআন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান নাহিদুল খান সাহেলের সভাপতিত্বে এবং ফাউন্ডেশনের মহাসচিব হুমায়ুন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে এতে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম। এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও জাসাসের সাবেক সভাপতি রেজাবুদৌলা চৌধুরী, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের পরিচালক সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীন, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি মতিউর রহমান ডিজেল, প্রজন্ম একাডেমির সভাপতি কালাম ফয়েজী, গণতান্ত্রিক জাগ্রত বাংলাদেশের সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম কলিম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিষদের সভাপতি রমিজ উদ্দিন রুমী, সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি এম. আহমেদ খান মন্টু ও যুবদল নেতা শরীফ বেপারিসহ অনেকে।
পিএনএস/এএ
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষ না : শামসুজ্জামান দুদু
10-02-2025 05:36PM
![](/static/image/upload/news/2025/02/10/6c130dd3f0f3496cf54263184a474f17_2.jpg?w=550&h=350)