কিশোরগঞ্জে আ.লীগের অফিসকে পাবলিক টয়লেট ঘোষণা

  06-02-2025 02:52AM

পিএনএস ডেস্ক: কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ অফিসকে পাবলিক টয়লেট ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১১টার দিকে আওয়ামী লীগ অফিসের পরিত্যক্ত ভবনটিতে অগ্নিসংযোগ করে এ ঘোষণা দেয় তারা। পরে রাত ১১টার দিকে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে ফেলা হয়।

জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে সরকার পতনের পর দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ জনতা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। দীর্ঘ ছয় মাস পর শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পরিত্যক্ত ভবনের দেয়ালে 'পাবলিক টয়লেট' লিখে দেয়। জেলার এক সময়ের রাজনৈতিক ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু, গত পাঁচ মাস আগেও যেখানে প্রবেশ করতে পুলিশের মুখোমুখি হতে হতো ২৪ ঘণ্টা পুলিশ পাহারায় থাকতো শহরের খরমপট্রি এলাকার এই কার্যালয়।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, ছাত্র হত্যার সঙ্গে জড়িত ফ্যাসিবাদীদের কোনো চিহ্ন বাংলাদেশের মাটিতে রাখতে চাই না। অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে তার শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। নিষিদ্ধ সংগঠনের কোনো কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না।

কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসা জনতা বলছেন, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর স্বৈরাচারের তীর্থভূমি হিসেবে চিহ্নিত। বুলডোজার দিয়ে আজ স্বৈরাচারের এই চিহ্ন মুছে দেওয়া হচ্ছে, তারই ধারাবাহিকতায় কিশোরগঞ্জেও ছাত্র-জনতা আজ ঐক্যবদ্ধ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জের অন্যতম সংগঠক আশরাফ আলী সোহান বলেন, পতিত স্বৈরাচার খুনি হাসিনা দীর্ঘ ১৭ বছরের স্বৈরাচারী কার্যক্রম পরিচালনা করতে বাংলাদেশে আবার বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পাঁয়তারা করছেন। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ করছে। হাসিনা ভারত থেকে বক্তব্য দেওয়ার প্রতিবাদে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় কিশোরগঞ্জে আওয়ামী অফিসে পাবলিক টয়লেট লিখে ফ্যাসিবাদ পতনের অর্ধবার্ষিকী উদ্যাপন করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ইকরাম হোসেন বলেন, খুনি হাসিনা হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেও তার মধ্যে বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই। আমি স্পষ্ট বলে দিতে চাই বাংলাদেশে বাকশালের জনক মুজিববাদের কোনো চিহ্ন থাকবে না।

উত্তেজিত ছাত্র-জনতার উপস্থিতি ও ভাঙচুরের কারণে কিশোরগঞ্জ শহরের গুরুত্বপূর্ণ ও আশপাশের বিপনীবিতানগুলো বন্ধ হয়ে যায় দ্রুত। এক পর্যায়ে সড়কে যান চলাচলও সীমিত হয়ে যায়।

প্রসঙ্গত, ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ প্রায় সব শীর্ষ নেতা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। ওই দিনই সারা দেশে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়, যা ছাত্র-জনতার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ছিল। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ভারতে পালিয়ে থাকা শেখ হাসিনার অনলাইন ভাষণের ঘোষণায় উত্তেজিত ছাত্র-জনতা রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবের বাড়ির সামনে জড়ো হয়। এ সময় ভবনটিতে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এরপর দেশের বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও প্রভাবশালী নেতাকর্মীদের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়।

পিএনএস/রাশেদুল আলম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন