শিক্ষার্থীদের না নিয়েই রাঙামাটিতে মাদ্রাসার শিক্ষা সফর

  06-02-2025 06:27PM

মাদ্রাসা বন্ধ রেখে শিক্ষা সফরের নামে শিক্ষার্থীদের না নিয়েই রাঙামাটিতে গেছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষক বৃন্দ। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা কুতুবপুর ইউনিয়ন এলাকায় শাহীমহল্লা মোহাম্মদীয়া আলিম মাদ্রাসায় এমন ঘটনা ঘটে। জেলা প্রশাসক, উপজেলা পরিষদ কিংবা শিক্ষা কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়াই পরিবারসহ এই কথিত শিক্ষা সফরে যান তারা।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের দেয়া ফেসবুক পোস্ট থেকে এ অভিযোগের খবর জানা গেছে।

নাফিসা রহমান নামের ওই অভিভাবক তার ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করে লেখেন, ‘‘মাদ্রাসা চলাকালীন সময়ে দলবলে পিকনিকে যাওয়ার অনুমতি কে দিলো তাদের, শিক্ষার্থীর গার্ডিয়ান হিসেবে আমি জানতে চাই। টাকার উৎস কি???
জানা গেছে, মাদ্রাসার মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগসাজশে নানা অনিয়মে জড়িত পরিচালক পর্ষদ ও সাধারণ শিক্ষকমন্ডলীর একাংশ। মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে নতুন পাঠ্য বইয়ের সঙ্গে বোর্ড বহির্ভূত বইগুলো শিক্ষার্থীদের বুক লিস্টে যুক্ত করতে নির্দিষ্ট একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আর্থিক চুক্তি করে। সেই চুক্তি মোতাবেক বই ব্যবসায়িদের অর্থে শিক্ষার্থীদের ছাড়া এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই কথিত শিক্ষা সফরের আয়োজন করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ওই মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষক জানায়, আমাদের মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকই সব কিছুর হর্তাকর্তা। তার ইচ্ছার কাছে জিম্মি পুরো প্রতিষ্ঠান। তার বাঁকা চোখের দৃষ্টি থেকে বাঁচতে এবং চাকরি হারানোর ভয়ে আমরা সাধারণ শিক্ষকেরা মুখ খুলতে পারি না।
স্থানীয়রা জানায়, মাদ্রাসা পরিচালনার আসন্ন কমিটি বাণিজ্যের অংশ হিসেবে আওয়ামী দোসর লুৎফর চৌধুরিসহ প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে একটা কুচক্রী মহল জোট গঠন করছে। সেই সাথে হরিলুটের সব ব্যবস্থা কায়েম করতে এখন দরকষাকষিতে ব্যস্ত।

ওই মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষা সফর যে শিক্ষার্থীদের নেয়া হয় না তা এখানেই প্রথম দেখলাম। হুজুর (প্রধান শিক্ষক) চাইলে আমাদের নিয়েও সুন্দর একটা আয়োজন করতে পারতেন। সামনে আমাদের পরীক্ষা। নিয়মিত ক্লাশ হয় না। মনে হয় হুজুর এসবে বেখেয়াল।
এ বিষয়ে কথা বলতে শাহীমহল্লা মোহাম্মদীয়া আলিম মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথিত বনভোজনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পরে মাদ্রাসা বন্ধ রেখে এই ধরনের পিকনিক করা যায় কি না প্রশ্ন করে এই প্রতিবেদক। এতে উত্তর দেওয়ার বদলে তিনি নিশ্চুপ ছিলেন। জেলা প্রশাসক, উপজেলা পরিষদের কাছে অনুমতি আছে কি না জিজ্ঞেস করলেও তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি। ব্যয়বহুল এই অনৈতিক আয়োজনে অর্থের উৎস কী, সেটাও বলতে পারেননি এই শিক্ষক। পরে ব্যস্ত আছেন বলে ফোন রেখে দেন।
সবশেষ জানা গেছে এই ঘটনায় আগামী শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) শাহীমহল্লা মোহাম্মদীয়া আলিম মাদ্রাসার সামনে মানববন্ধন করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা।

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন